শৈলকুপায় ৩ শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ৩ শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় একমাত্র আসামী ইকবাল হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নাজিমুদ্দৌলা এ দণ্ডাদেশ দেন। একই সাথে তাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ফাঁসির আসামি শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের মোঃ গোলাম নবীর ছেলে ইকবাল হোসেন। আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামের আসামী ইকবালের সাথে তার পিতা গোলাম নবীর টাকা সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে বিরোধ হয়। এরই জের ধরে ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আসামী ইকবাল কার্টুন দেখানোর কথা বলে নিজের ঘরে ভাতিজা সাফিন, আমিন ও ভাগ্নে মাহিনকে ডেকে নেয়। এরপর তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে, গ্যাসের সিলিন্ডার খুলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাফিন ও আমিন দগ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাগ্নে মাহিনও মারা যায়। এ ঘটনায় সাফিন ও আমিনের পিতা দেলোয়ার বাদি হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ইকবালকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলায় একমাত্র আসামী ইকবালকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে। আসামী বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
নিহতের আরেক মামা সাইফুল ইসলাম জানান, ছোট ছোট বাচ্চাদের কোন অপরাধ ছিলো না। ওদের পিতার সাথেও আহামরি কোন রকম দ্বন্দ্ব ছিলো না। তারপরও তাদেরকে ফুসলায়ে ঘরের ভিতর নিয়ে হাতুর দিয়ে মেরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। আদালত যে রায় দিয়েছে এই রায়ে আমাদের পরিবার সবাই সন্তুষ্ট।
রাষ্ট্র পক্ষের কৌসুলি (পি পি) ইসলাম হোসেন বলেন, আসামী ইকবাল ঘরের ভিতর নিষ্পাপ তিনটি শিশুকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। হত্যার পর আসামির বিচারেরর দাবিতে শৈলকুপাসহ বিভিন্ন জায়গাই বিচার চেয়ে মানববন্ধন করে শিশুদের স্বজনেরা। আজ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামিকে যে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি। এই ঘটনার মধ্যদিয়ে শিক্ষণীয় বিষয় হলো সমাজে এমন নির্মম ঘটনা যেন আর না ঘটে।
