ঝিনাইদহে অনাবৃষ্টিতে ভূ- গর্ভস্থ পানির স্তর তলানিতে

দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ঝিনাইদহের অনেক এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। শুকিয়ে গেছে জেলার নদী, খাল-বিল, পুকুরসহ প্রাকৃতিক উৎসগুলোও। ফলে বোরো ধানে সেচ দেয়ার পানি সঙ্কটে বিপাকে পড়েছে কৃষক। তবে আজ (১৫ মার্চ) বুধবার হতে ১৯ মার্চের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ১৬ এবং ১৭ মার্চ অত্র এলাকায় বেশি পরিমাণ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঝিনাইদহের পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গায় অবস্থিত প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঝিনাইদহে বোরোধান আবাদকারী কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস বৃষ্টি না হওয়ায় জেলায় শুকিয়ে গেছে খাল-বিল, পুকুর, নদী। পানি উঠছেনা কোন কোন নলকূপেও। প্রতি বছরই শৈলকূপা উপজেলাতে নলকূপে বেশি পরিমাণ সমস্যার সৃষ্টি হয়। অকেজো হয়ে পড়েছে অসংখ্য নলকূপ। কৃষকরা আরও বলেন, সঠিকভাবে জমিতে সেচের ব্যবস্থা না করতে পারলে বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রায় সব নদনদীই এখন শুষ্ক। শুকিয়ে গেছে পানির অন্যসব প্রাকৃতিক উৎসও। শিগগিরই বৃষ্টি না হলে বোরোসহ বিভিন্ন সবজির উপর উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর গ্রামের কৃষক উম্বাদ আলী বলেন, তার বৈদ্যুতিক মোটরে পানি উঠছে না। মাটি খুঁড়ে ৭ থেকে ৮ ফুট গভীরে মোটর বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে।

একই সমস্যার সম্মুখীন জামির হোসেন, মজনুর রহমান বলেন, স্যালোমেশিন এ সেচ দেওয়া হচ্ছে ।
তারা আরও বলেন, এতে তাদের খরচ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত পানি পেতে অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টি হলে এই সমস্যার সমাধান হত।

জেলা কৃষি বিভাগ জানান, চলতি মৌসুমে ৮৯ হাজার ৮’শ ১৪ হেক্টর জমিতে বোরোধানের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২ হাজার ৩৮৬ হেক্টর কম। আর এই পরিমাণ ধানের আবাদ থেকে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

Nagad

খরা ও অনাবৃষ্টি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজগার আলী জানান, অনাবৃষ্টির কারণে ঝিনাইদহের কৃষকরা আউশ ধানের বীজতলা তৈরি করতে পারছে না। এছাড়া তিল, মুগ ও পাট চাষে ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে ফল-ফসল, ক্ষেত-খামার, মাছ চাষসহ নানা ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভূ-উপরিভাগের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের চাপ বেড়ে গেছে। এরফলে মাটির নিচে পানির স্টক কমে আসছে।