বরিশালে সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ ১৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, টেন্ডার দুর্নীতি, অবৈধ নিয়োগ, অর্থ আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।


সাবেক মেয়রের পাশাপাশি যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তারা হলেন—প্রশাসনিক কর্মকর্তা লকিতুল্লাহ, সাবেক সচিব মাছুমা আক্তার, উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস, সার্ভেয়ার তাপস, নাছির, মশিউর, আর্কিটেক্ট সাইদুর, জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল, সম্পত্তি শাখার ফিরোজ ও মাহবুবুর রহমান শাকিল, প্ল্যান শাখার লোকমান ও কালটু, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, বাজার সুপারিন্টেনডেন্ট নুরুল ইসলাম, ট্রেড লাইসেন্স সুপারিন্টেনডেন্ট আজিজুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচএম কামাল ও সাইফুল ইসলাম মুরাদ, এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির।
দুদক ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন— নাম, পদবি, বিভাগ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বরসহ টেন্ডার, নিয়োগ, অর্থ বরাদ্দ, দিঘির মালিকানা, বালু ভরাট, ব্যানার তৈরিতে বরাদ্দ ১৩ লাখ টাকা, ফেসবুক পেজ বুস্টিংয়ের জন্য বরাদ্দকৃত ১.৫৮ লাখ টাকা এবং প্রায় ৫০ লাখ টাকার কেনাকাটার কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাইয়ুম হাওলাদার স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
দুদকে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক মেয়র খোকনের নেতৃত্বে কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে বরিশাল সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতির ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। নিয়োগে ঘুষ, প্রকল্পে লুটপাট, অর্থ আত্মসাৎ এবং সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অনৈতিক অর্থ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বিশেষভাবে অভিযুক্ত হয়েছেন স্বপন কুমার দাস। তিনি প্রকৃতপক্ষে পরিসংখ্যানবিদ হলেও উচ্ছেদ শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তিনি দুর্নীতির অন্যতম চালক ছিলেন। ২০২১ সালে বরিশালে সংঘর্ষের মামলায় তিনি ছিলেন অন্যতম আসামি। তার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি নির্দোষ।’
অন্যদিকে জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে দুদকের একটি চিঠি পেয়েছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেবো। তবে অন্যদের বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’
দুদকের পরিচালক মোজাহার আলী সর্দার বলেন, ‘এটি একটি চলমান তদন্ত। আমরা এখন প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছি। তাই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।’