‘গুণগত মানের প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তির উপর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে’

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২৩

প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় উপবৃত্তি বিতরণে ধারাবাহিক সাফল্যের অংশ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ডাক অধিদপ্তর ও নগদ লিমিটেড-এর সাথে পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, এমপি এর উপস্থিতে আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির ফলে আগের মতো ধারাবাহিকতা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার উপবৃত্তি বিতরণ করবে নগদ লিমিটেড।

এ উপলক্ষ‌্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাই হচ্ছে শিক্ষার ভিত্তি। গুণগত মানের শিক্ষার এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। প্রাথমিক শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রা শুরু হয়েছে।শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের সহায়তার অংশ হিসেবে বিটিআরসি‘র এসওএফ থেকে ইতোমধ‌্যেই দেশের সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ‌্যালয় এবং পার্বত‌্য অঞ্চলের ২৮টি পাড়াকেন্দ্র ডিজিটাইজ করার যাত্রা আমরা শুরু করেছি। ডিজিটাইজের এ যাত্রা অব‌্যাহত থাকবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন,এমপি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো: আবু হেনা মোরশেদ জামান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহম্মাদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত,ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: হারুনুর রশীদ এবং নগদ লিমিটেডের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির এ মিশুক উপস্থিত ছিলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব‌্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মায়েদের হাতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়ার উদ‌্যোগকে একটি অসাধারণ কাজ উল্লেখ করে বলেন, এটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদের জন‌্যও একটি ঐতিহাসিক কাজ। তিনি ত্রুটিহীনভাবে এই উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়ার জন‌্য নগদকে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি এই ব‌্যাপারে নগদ কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী উপবৃত্তির টাকা পেতে কোন অভিভাবক যাতে প্রতারিত না হয় এই বিষয়ে অভিভাবকদের মধ‌্যে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, নগদের মাধ‌্যমে ৫ বছরের জন‌্য উপবৃত্তির টাকা বিতরণের এই চুক্তি অত‌্যন্ত সম্মানের। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদের একাউন্টে তাকে দশ হাজার টাকা প্রেরণ করে নগদের শুভ উদ্বোধন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত। মন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষাকে সোনার বাংলা বিনির্মাণের হাতিয়ার উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের ধ্বংশ স্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ‌্যালয় জাতীয়করণ, কুদরত এ খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছেন এবং আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস‌্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন ও বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ‌্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ১৯৯৬-২০০১ শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর বপন করা এই বীজকে চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ সালে থেকে গত ১৪ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় অগ্রগতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ বিস্ময়কর সফলতা অর্জন করে বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সাল থেকে আমরা মায়েদের হাতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপবৃত্তির টাকা সরাসরি মায়েদের হাতে পৌঁছে দিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রগতি হয়েছে।

Nagad

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজোয়ান আহমেদ, ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক ছালেহ আহমেদ এবং নগদের নির্বাহী পরিচালক সাফায়েত আলম নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি থেকে জানা যায়, প্রতি অর্থবছরে ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার জন্য দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে জিটুপি পদ্ধতিতে ইএফটি-এর মাধ্যমে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণ করছে। এতে পরিচালন বাজেটে প্রতি অর্থবছর প্রায় ২০০০ কোটি বিতরণ করা হচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপবৃত্তির অর্থ বিতরণের জন্য আজ ত্রিপক্ষীয় এই চুক্তি সম্পাদিত হলো।