আজ চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৮:২৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২৩

আজ শুক্রবার (২১ এপ্রিল)। এই দিনে ২০২০ সালে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল করোনা রোগীদের সেবায় চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল। যা বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল হিসেবে স্বীকৃত। করোনা মহামারী যখন বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব আতংকিত, হতাশাগ্রস্থ তখন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল এগিয়ে এসেছিল মানুষের সেবায়। করোনা মহামারীর শুরুতে যখন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা দিতে অনীহা এবং সরকারি হাসপাতালসমূহ করোনা রোগীদের চাপে বিপর্যস্ত, ঠিক তখনই আশার প্রতীক হয়ে গড়ে উঠে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল।

এই হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা, ঔষধ, খাবারসহ বিভিন্ন মেডিকেল টেস্ট, কোভিড-১৯ টেস্ট পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয়। ৪৮ জন স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের অভ্যন্তরে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিল। এই হাসপাতালে দুহাজারের অধিক রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। এছাড়াও টেলিফোনেও সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ।

শিল্প প্রতিষ্ঠান নাভানা গ্রুপের ১৬ হাজার বর্গফুটের একটি শেডে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়ার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে গড়ে উঠে এই হাসপাতাল এবং সেবা প্রদান করে।

উল্লেখ, করোনা মহামারী লকডাউনের শুরুতে ২৫ মার্চ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ার স্বপ্নের কথা লিখেন। পাশাপাশি তিনি চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের মানুষদের ১০০ টাকা দানের মাধ্যমে ফিল্ড হাসপাতাল গড়ার জন্য শরীক হতে আহ্বান করেন। সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব সাড়াই মাত্র ১৪ দিনে তৈরি হয় চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল। হাসপাতাল গঠনে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ ছিল অবিস্মরণীয়। চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল ছিল করোনাযোদ্ধা ও রোগীদের জন্য সাহসের বাতিঘর।

বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতালের জন্য ০৪ জন চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল ও হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছিল বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালসহ অনেক আইসোলেশন সেন্টার।

কভিড-১৯ যখন ভয়াবহ রূপ তখনকার সময়ে রোগীকে সেবা দেওয়ার একটি ছবি।

এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রধান উদ্যোক্তা ও নির্বাহী ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, আজকের দিনে করোনা মহামারীতে নিহত সকল মানুষের প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা জানাই। সময়ের প্রয়োজনে মানুষের জন্য এগিয়ে আসতে পেওে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার সকল ভলান্টিয়ার, সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সকল শ্রেণির মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সাধারণ মানুষের অংশ্রহণ ছাড়া এই ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠা সম্ভব না।

Nagad

আগামীতে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল মানুষের সেবা নিয়োজিত থাকবে-জানিয়ে ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল ফাউন্ডেশন ও ট্রাস্ট করে প্রতিমাসে একটি করে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলমান। যেখানে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, ঔষধ ও মেডিকেল পরীক্ষা চলছে। ডায়বেটিস রোগীদের বিশেষ স্ক্যানিং প্রোগ্রাম, ঠোঁট ও তাঁলু-কাঁটা রোগীদের অপারেশ, চোখের ছানি অপারেশন সহ অবহেলিত মানুষের উন্নয়নে অন্যান্য মানবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে একটি হাসপাতাল করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সময়ের প্রয়োজনে এই ফিল্ড হাসপাতালের গুরুত্ব অপরীসীম। ২০২০ সালের ইতিহাসে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল মানুষের কাছে শ্রদ্ধা, ভক্তি, সাহস ও আশার অন্যতম স্থান হয়ে থাকবে অনন্তকাল।

সারাদিন. ২১ এপ্রিল. আর