বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা:

হাইকোর্টে ফের সেই মিন্নির জামিন আবেদন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২৩

বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। সংগৃহীত ছবি

বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ফের হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার (৮ মে) মিন্নির অন্যতম আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। পরে এ বছর ১১ জানুয়ারি বিচারপতি শেখ হাসান আরিক ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনটি শুনতে অপারগতা জানান।

এর আগে গত বছরের ১৯ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিন্নি খালাস চেয়ে আপিল করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু পরে তা নাকচ করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ১৬ অক্টোবর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে মিন্নির উপস্থিতিতে তার স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।

এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ/ছয় জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা।

Nagad

পরে একই বছরের ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হয়।

আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় দেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালত। রায়ে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং তিনজনকে খালাস দেয়া হয়।

এর আগে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিষয়ে রায় দেন আদালত। রায়ে ১০ জনের মধ্যে ৪ জনকে খালাস এবং ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। পরে নিয়ম অনুসারে একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।

খালাস পেয়েছেন— মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছিলেন মিন্নি। পরে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর সে আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জরিমানাও স্থগিত করেন উচ্চ আদালত। এখন জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলে দুটি আপিল এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের বিষয়ে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি একইসঙ্গে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

উল্লেখ্য, বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়।