ইমরান খানকে গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে রণক্ষেত্র পাকিস্তান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় অর্ধশত পিটিআই সমর্থককে। বিভিন্ন জায়গায় সেই বিক্ষোভ রীতিমতো সহিংস ছিল। রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর রণক্ষেত্রর রূপ নেয়।
পিটিআই সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদরদপ্তরে হামলা করে। লাহোরে কোর কম্যান্ডারের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। করাচি ও পেশোয়ারেও সেনার শিবিরের সামনে বিক্ষোভ করে তারা। পাকিস্তানে সাম্প্রতিককালে এভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়নি।


এদিকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তার বৈধ বলে ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে।
ইমরান খানের আইনজীবী ফয়সাল ফরিদ চৌধুরী বলেন, ‘আদালত গ্রেপ্তার বৈধ ঘোষণা করেছে। ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আমরা দলের নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করছি।’
সংবাদপত্র ডনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ইমরানের ভাতিজা হাসান নিয়াজি বলেন, প্রতিবাদকারীরা সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ঘিরে বসে থাকবেন। সাধারণ মানুষ এতটাই রেগে আছে যে, পিটিআই কর্মীরা তাদের থামাতে পারছে না।
করাচিতে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। লাহোর, করাচি, ইসলামাবাদ-সহ পাকিস্তানের প্রায় সব শহরে ইমরানের দলের কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়েন। তারা বলতে থাকেন, নেতার গায়ে যদি কোনোভাবে হাত পড়ে, তাহলে তারা দরকার হলে জীবন দিয়ে দেবেন।
বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। অনেক জায়গায় আগুন ধরানো হয়েছে। কিছু জায়গায় পুলিশ লাঠি ও গ্যাস ব্যবহার করে কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে চেয়েছে। গুলিও চালিয়েছে। কোয়েটায় পুলিশের গুলিতে একজন পিটিআই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সেখানেও প্রবল বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পিটিআই কর্মীরা। পিটিআই কর্মীরা প্রচুর সরকারি বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। অনেক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেছেন, পিটিআই কর্মীরা আর রাজনৈতিক কর্মী নন, তারা জঙ্গিতে পরিণত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ইমরান খানকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামাবাদে হাইকোর্টের বাইরে থেকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ইমরানকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার মাথায় ও পায়ে আঘাত করা হয়েছে। রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভ করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সমর্থকরা। এছাড়া করাচি, লাহোর, পেশোয়ারসহ ছোট-বড় সব শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।