দক্ষিণ সিটির অভিযান, ১২ স্থাপনাকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২৩

এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১২ স্থাপনাকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার ৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১২ জুলাই) করপোরেশনের আওতাধীন পরিবাগ, শাগবাগ, উত্তর মুগদা, দক্ষিণ মুগদা, ঝিগাতলা, বাবুবাজার, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, পূর্ব নন্দীপাড়া, পূর্ব শেখদি ও কুতুবখালী এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এক নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মঞ্জুরুল হক ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পরিবাগ ও শাহবাগ এলাকায় ৩৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং এনডিই লিমিটেড কর্তৃক নির্মিত একটি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পান। আদালত এ সময় এনডিই লিমিটেডের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশীদকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম আর সেলিম শাহনেওয়াজ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মুগদা ও দক্ষিণ মুগদা এলাকায় ৩১টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।

তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিগাতলা এলাকায় ৫২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় ২টি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি ভবনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমেদকে ৫০ হাজার ও আরেকটি ভবনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার সুজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ ও জরিমানা আদায় করেন।

চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পান। আদালত এ সময় ১ মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

Nagad

পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সফি উল্লাহ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় ১৩টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

ছয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার হক ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নন্দীপাড়া এলাকায় ৩৬টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শেখদি এলাকায় ৫২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

দশ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবখালী এলাকায় ৩০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

আজকের অভিযানে সর্বমোট ২৬৪টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ১২টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১২ মামলায় সর্বমোট ১ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

৯৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বয়ে বিশেষ ছিল না অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা ও চারপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন বোধে সেখানে ব্লিসিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। এরপর সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব অভিযানে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণসহ নানাবিধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।

এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ অঞ্চল-১ এ ১১টি, অঞ্চল-২ এ ১২টি, অঞ্চল-৩ এ ২৫টি, অঞ্চল-৪ এ ১৩টি, অঞ্চল-৫ এ ১৬টি, অঞ্চল-৬ এ ৩টি, অঞ্চল-৭ এ ৩টি, অঞ্চল-৮ এ ৫টি, অঞ্চল-৯ এ ৫টি এবং অঞ্চল-১০ এ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা, প্রয়োজন অনুযায়ী ব্লিচিং পাউডার ছিটানো এবং সবশেষে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।

সবমিলিয়ে আজ ৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।