জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২৩

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সংগৃহীত ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপিকে বলে দেওয়া হয়েছে, আন্দোলনের নামে জানমাল, সম্পত্তি ধ্বংস অথবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকারের কোনো বাধা থাকবে না।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এসেছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত কী হবে? দেখুন, হঠাৎ করেই তারা (বিএনপি) এমন এমন প্রোগ্রাম দিচ্ছেন যেগুলোয় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। তারা বলছেন- তারা আন্দোলন শুরু করেছেন, তারা আন্দোলন করবেন। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনো বাধা দিচ্ছি না।

মন্ত্রী বলেন, যদি জনগণ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু জনগণকে জোর করে আনতে চাইলেই আমাদের আপত্তি। কর্মসূচির নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া, জানমালের ক্ষতি বা জীবননাশ হলে তখনই আমরা বাধা দেবো।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে সরকারের কোনো বাধা নেই। আপনারা (সাংবাদিক) দেখেছেন, বিএনপি সব ধরনের কর্মসূচি করছে। তারা পদযাত্রা করেছে, মানববন্ধন করেছে। আমরা কিন্তু কোনোটাতেই বাধা দেইনি। কারণ, তারা সুন্দরভাবে এসব কর্মসূচি করেছেন। ফলে ভবিষ্যতেও যদি শান্তিপূর্ণভাবে করতে চান করবেন। সেখানেও আমাদের বাধা থাকবে না। কিন্তু জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে জানমাল বা সম্পদের ক্ষতি করতে চাইলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। এটিই তাদের বলে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির কর্মসূচির একই দিনে ক্ষমতাসীন দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ায় জনদুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, সেটি আপনারাই দেখছেন। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে কর্মসূচি দেবেই, শুধু ইসে (আওয়ামী লীগকে) দেখছেন কেন? আরও অন্য দলগুলোও তো কর্মসূচি দিচ্ছে। সেগুলো নিশ্চয়ই আপনাদের নজরে পড়ছে।

Nagad

প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আলোচনার মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা বেশি এসেছে। তাদের নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা এর জবাব দিয়েছি।

নির্বাচন নিয়ে প্রতিনিধিদল ঠিক কী জানতে চেয়েছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তাদের জানিয়ে দিয়েছি, সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন তিন মাস সরকার পরিচালনা করবে। সরকার মানে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচন পরিচালনা করতে যা যা প্রয়োজন, তা নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে করতে পারবে। আমরাও মনে করি, অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারবে কমিশন।

গুম, খুন ও বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর যে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব বিষয়ে বিশেষ কোনো কথা হয়নি। তারা বলেছে- তারা পর্যবেক্ষণ করেছে। দেশে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা অনেক কমেছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিনিধিদলকে আমরা জানিয়েছি, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জনপ্রতি যে ১২ ডলার সহায়তা দিতো, হঠাৎ করে তা ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের সংকট বাড়বে। কারণ, সেখানে স্থানীয়দের চেয়ে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা অনেক বেশি। স্থানীয়রা শ্রমবাজার হারাচ্ছে, আমাদের বন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে- বৈঠকে এসব অসুবিধার কথা জানিয়েছি প্রতিনিধিদলকে।