‘আ.লীগ গুগলি বুঝতে পারেনি, কোন দিক দিয়ে বল যাচ্ছে’

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৩

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ গুগলি বুঝতে পারেনি, কোন দিক দিয়ে বল যাচ্ছে। আমরা বহুদূর এগিয়ে গেছি। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ বোল্ড আউট হয়ে গেছে।

সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপি নেতাদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে দলটির মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের প্রবীণ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। আমানউল্লাহ আমানকে পিটিয়ে আটক করেছে। পরে চিত্রনাট্য সাজিয়েছে সরকার, গল্প তৈরি করেছে, ভিডিও করেছে।

তিনি আরও বলেন, জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক থাকে না, তারা এমন গল্প তৈরি করে। জনগণ তাদের গল্প খায়নি। এতে করে কি আমাদের নেতা গয়েশ্বর বাবু, আমানউল্লাহ আমান ছোট হয়ে গেছেন? হয়নি। ছোট হয়েছে তারা, যারা এ ধরনের নিকৃষ্ট নাটক সাজিয়েছেন।

সরকার পক্ষে আবেদ আলী নির্বাচন পর্যবেক্ষক ভাড়া করে এনেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘ওই ভাড়া করা লোকেরা বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। বাহ, তুমি কে ভাই এসব কথা বলার? তুমি ভাড়া করা।’

তিনি বলেন, ‘আবারো বাড়ি বাড়ি গ্রেফতার শুরু করেছে, তাদের বলতে চাই, গত ১৫ বছর কম নিপীড়ন করেছেন? দমন করতে পেরেছেন? অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অন্যথায় পালানোর সময় পাবেন না।’

Nagad

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী না কি বলেছেন আপনাদের ভয় না পেতে? অন্যায় না করলে ভয় কীসের? আমরা কর্মকর্তাদের বলতে চাই, জনগণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না, গ্রেফতার বন্ধ করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার এত ভীত যে একটা প্রোগ্রাম থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে, গ্রেপ্তার করেছে, মামলা করেছে। আবার আমাদের নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করেছে। স্ত্রী-কন্যা-পুত্রদের ঘরে আটকে রেখে তল্লাশি করেছে।

এসব করে আন্দোলন আটকানো যায়নি। এই মানুষের ঢল থামানো যাবে না। যতই গ্রেপ্তার করুক, থামানো যাবে না।

বিএনপি জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বাংলাদেশে সব দল মিলে একটা ঐক্য তৈরি করেছে। আর সেটি হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। এক দফা দাবি- এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের সমালোচনা করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস তার বক্তব্যে বলেন, আজকে এই জনসমাবেশে যত লোক রয়েছে সবাইকে জেলখানায় পাঠালেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন বন্ধ হবে না। আওয়ামী লীগের গদি একদিন ভেঙে যাবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে কোনো কর্মীর মৃত্যু হলে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। মামলায় প্রধান আসামি করা হবে শেখ হাসিনাকে আর দ্বিতীয় আসামি করা হবে ওবায়দুল কাদেরকে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এক দফা এক দাবিতে রাজপথে নেমেছি। আপনারাও মাঠে নামুন, প্রয়োজনে রাস্তায় পড়ে মরে যাব। তবুও তারেক রহমানের বিজয় এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরব। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করি না।’

আমান বলেন, ‘আন্দোলনে ইতোমধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সারা দেশের নেতাকর্মীদের জেলে আবদ্ধ করা হয়েছে। তাদের আমরা মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। আন্দোলন চলছে, আন্দোলন চলবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য আমিরুল হক এবং দক্ষিণের সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান এজেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।