জাল টাকা তৈরি করা চক্র পুলিশের হাতে, কারবারে সহোদর-ভাগ্নে
চার ভাই ও ভাগ্নে মিলে জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরি করে আসছিল। প্রতি লাখ জাল রুপি তৈরিতে তাদের খরচ হতো ৩ থেকে ৪ হাজার। এক লাখ রুপি বিক্রি করত ২৭ হাজার টাকায়। এর পাশাপাশি দেশীয় জাল টাকাও তৈরি করে আসছিল চক্রটি। ভাগ্নেকে নিয়ে দুই ভাই জাল নোট তৈরি করত। বাকি দুই ভাই অর্ডার নেওয়া, বাজারজাত এবং বিনিময় করত।
এভাবে প্রায় ১৫ বছর ধরে জাল নোট তৈরি করে এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল তারা। এই চক্রটির দুই ভাই ও ভাগ্নে চক্রকে ভারতীয় জাল ১ লাখ রুপি, ১০ লাখ ২০ হাজার জাল টাকা এবং জাল রুপি-টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।


শুক্রবার (৪ আগস্ট) লালবাগ থানাধীন আর এন ডি রোডের শ্মশানঘাট কালীমন্দিরের সামনে থেকে প্রথমে চক্রের সদস্য ভাগ্নে মো. মাহিকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের মূল হোতা সাজ্জাদ হোসেন রবিন (৩৮) ও রবিনের ছোট ভাই সাদমান হোসেন হৃদয়কে (৩০) গ্রেপ্তার করে ডিএমপির লালবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাহি (১৯), সাজ্জাদ হোসেন রবিন (৩৮) এবং সাদমান হোসেন হৃদয় (৩০)। তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ বিশ হাজার জাল টাকা ও ভারতীয় ১ লাখ রুপি এবং জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে কথা বলেন লালবাগ বিভাগের ডিসি জাফর আহমেদ।
তিনি বলেন, চক্রটিতে চার ভাই ও ভাগ্নে জড়িত। এর মূলহোতা হুমায়ুন। চক্রের সদস্যদের মধ্যে মাহি ও তার ভাগ্নে হৃদয় মিলে জাল টাকা ও রুপি তৈরি করত। সাজ্জাদ একজন গ্রাফিক্স ডিজাউনার। ফলে টাকা ডিজাইন করত। বাকি দুই ভাই হুমায়ুন ও শফিউল্লাহকে দিয়ে অর্ডার নেওয়া, বাজারজাত ও গ্রাহকের কাছে জাল টাকা ও রুপি পৌঁছাত। পলাতক হুমায়ুন ও শফিউল্লাহ ২০০৭ সাল থেকে কোটি কোটি জাল টাকা ও রুপি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেয়। পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
জাফর আহমেদ আরও বলেন, চক্রটি টাকার চেয়ে জাল রুপি তৈরি করেই বেশি টাকা পেত। প্রতি লাখ জাল রুপিতে তারা পেত ২৭ হাজার টাকা। আর এসব জাল টাকার ওপর তারা এমনভাবে জল ছাপ দিত যে আসল না নকল তা বোঝা বড় কঠিন হতো।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, চক্রের মূলহোতা সাজ্জাদ সূত্রাপুরে একবার ধরা পড়েছিল। তার নামে থানায় মামলাও আছে।