বাতিল নয়, পরিবর্তিত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এটি ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে প্রতিস্থাপিত হবে।
সোমবার (৭ আগস্ট) মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার উচ্চপদস্থ একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হচ্ছে না, পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর অনেকগুলো ধারা সংশোধন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে নতুন একটি আইন করা হবে- মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা, সর্বোপরি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে দীর্ঘদিন দাবি উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে পাস হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। আইনটি কার্যকরের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর এর অপপ্রয়োগের অভিযোগ-ও ওঠে।
সরকারের পক্ষ থেকে এর আগে বহুবার আইনটি সংশোধনের আশ্বাস দিলেও তা করা হয়নি। তবে গত ২৫ জুলাই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে এ সংশোধনী জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে।
কি আছে আইনটিতে;
আইনটিতে বলা হয়, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ণ করলে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তা ব্লক বা অপসারণের জন্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে পুলিশ পরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেপ্তার করতে পারবে।
আইনে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়। ফলে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করা হয়, বা প্রকাশ করে বা কাউকে করতে সহায়তা করে ওই আইন ভঙ্গ করলে এই আইনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা হতে পারে, ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আইন অনুযায়ী ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার নামে প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা চালালে বা মদদ দিলে অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।