সুজন তাজওয়ারের নতুন কবিতা ‘কফিন’
একে একে যদি সারিবদ্ধ করা হয়
এর সংখ্যা গিয়ে দাড়াবে সতের কিংবা তারো অধিক।
হ্যা আমি কফিনের সংখ্যাই বলছি,
বুলেটের আঘাতে ঝাঁজরা হওয়া,
রক্তে ভেজা, ক্ষতবিক্ষত! নিস্তেজ কফিনের কথাই বলছি।
কফিনের ভিতর থেকে একটি শিশুর কন্ঠস্বর ভেসে আসছে…
আমাকে তো মারবে না?
আমি মায়ের কাছে যাব।
তার খানিকটা পরেই নারী কন্ঠস্বরের আহাজারি।
এদের মধ্যে কেউ হারিয়েছে স্বামী, কেও হারিয়েছে আদরের সন্তান।
তারপরেই ধ্বনিত হলো বজ্র কন্ঠস্বর,
কি চাও তোমরা?
তার পরেই কফিন গুলো নিস্তেজ হয়ে গেল।
কিন্তু জোড়ালো,বজ্রকন্ঠস্বরটি আমার কর্ণে পুনরায় ধ্বনিত হলো!
আমি কোথায় যেন শুনেছি ;
হ্যা কোথায় যেন শুনেছি এই কন্ঠস্বর।
রেসকোর্স ময়দানের উত্তাল জনসমুদ্রে যে কন্ঠস্বর ধ্বনিত হয়েছিল,
এটা কি সেই কন্ঠস্বর!
নাহ্ নাহ্ এ হতে পারে না।
পুনরায় ধ্বনিত হলো কী চাও তোমরা?
এবার আর স্থির থাকতে পারলাম না।
ছুটে গেলাম কফিনের পাশে,খুলে ফেললাম পেরেক।
না না না এ হতে পারে না,আহ্।
সাত কোটি নিরীহ বাঙালির নেতা,
স্বাধীন বাংলার স্থপতি,
রক্তমাখা দেহে কফিনে শুয়ে?
এ আমি কি দেখলাম!
না না না এ হতে পারে না।
এ কফিন মিথ্যে,এ কন্ঠেস্বর মিথ্যে,আমার চোখ মিথ্যে।
মুজিবরা কখনো মরে না,মুজিব মরতে পারে না।
সে তো বাঙালির ধমনিতে, শিরায় শিরায় সর্বদা প্রবাহমান।