‘বাংলাদেশে আসার পর থেকেই আমার ওপর বার বার হামলা হয়েছে’

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকেই আমার ওপর বার বার হামলা হয়েছে। কোটালিপাড়ায় সেই ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের বোমা পুতে রাখা হয়েছিল। হ্যাঁ, বেঁচে গেছি আমি বার বার। কেন বেঁচে গেছি, সেটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন- কেন বার বার তিনি মৃত্যুর হাত থেকে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারবেন না।’ এটা খালেদা জিয়া কীভাবে বলেছিলেন? এই হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল, আর ধারণা করেছিল, আমি মারা যাব। খালেদা জিয়া আরও বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’

আজ (সোমবার) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্টের নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভীষিকাময় সেই দিনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কেবল বক্তব্য শেষ করেছি, নিচে নামবো, তখন ফটোগ্রাফার গোর্কি আমাকে বলল- আপা একটু দাঁড়ান আমি ছবি নিতে পারিনি। সাথে সাথে অন্য ফটোগ্রাফাররা বললো আপা একটু দাঁড়ান, কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। সাথে সাথে শুরু হয়ে গেল গ্রেনেড হামলা। হানিফ ভাই আমার পাশে ছিল, সাথে সাথে তিনি টেনে বসিয়ে দিলেন। আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরল।

তিনি বলেন, যেসব গ্রেনেড ছোড়া হলো সেগুলো ট্রাকের ওপরে না পড়ে ট্রাকের ডালার সাথে বাড়ি খেয়ে নিচে পড়ে যায়। সমস্ত স্প্লিন্টার হানিফ ভাইয়ের মাথায়। তার সমস্ত গা বেয়ে রক্ত… আমার কাপড়ে এসে পড়ছে। প্রথমে তিনটা, তারপর একটু বিরতি দিয়ে আবার একটার একটা গ্রেনেড মারতে শুরু করল। আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত, আইভি রহমান মহিলাদের নিয়ে নিচেই ছিলেন।

তিনি বলেন, ২০০৪ সালের এই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দলের নেতাকর্মীদের মানবঢালে আমি বেঁচে গিয়েছিলাম। সেদিন লাশের ওপর লাশ পড়েছিল। সেদিন আমি আমার বাসার সবাইকে নামিয়ে দিই কোথায় কোথায় রোগী আছে, তাদের খুঁজে বের করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। তখন তো খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখন কী ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি, সেটাই প্রশ্ন। সে কেন পুলিশকে বাধা দিল? সে কেন কোনো উদ্যোগ নিলো না হামলা থেকে রক্ষা করতে? এতে কী প্রমাণ হয়। এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে খালেদা জিয়া-তারেক রহমান গং যে জড়িত, এতে কোনো সন্দেহ নেই এবং তদন্তেও সেটা বেরিয়েছে।

Nagad

এর আগে, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্টের নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর গ্রেনেড হামলায় আহতদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। এ ছাড়া দলটির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। আহতদের অনেকে এখনও শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।