জোহানেসবার্গে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী, ব্যস্ত দিন কাটবেন আজ
বৃহত্তর আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠেয় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত রাতে এখানে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট (ইকে-৭৬৫) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) জোহানেসবার্গের ওআর টাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সমবায় শাসন ও ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী পার্ক টাউ এবং সেদেশে বাংলাদেশের হাইকমিশনারনূর-ই হেলাল সাইফুর রহমান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
সেখানে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শেখ হাসিনা তার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল রেডিসন ব্লু স্যান্ডটনে যান।
সেখান থেকে আজ ব্যস্ত দিন কাটবেন প্রধানমন্ত্রী। কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার (২৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেলে জোহানেসবার্গে একটি হোটেলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে গত সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেক প্রকল্প সই করেছি। আট বছরে আমরা এ পর্যন্ত ৪০০ কোটি ডলার পেয়েছি। প্রকল্পগুলো যেন ত্বরান্বিত হয়, এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ড. মোমেন বলেন, আমরা ঋণের সুদের হার কম চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। আমরা বলব, সস্তায় বিবেচনা করলে ভালো হয়। জলবায়ু ইস্যু থাকবে, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ চাই। বাণিজ্য বাড়াতে চাই।
আলোচনায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয় আমাদেরও অগ্রাধিকার। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। প্রধানমন্ত্রীকে আবার ক্ষমতায় রাখা গেলে এ অঞ্চলের জন্য মঙ্গল হবে। শেখ হাসিনা শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীকে যদি ক্ষমতায় রাখা যায়, পুরো অঞ্চলের জন্য, আমাদের জন্য; ভারত, নেপাল ও ভুটান প্রতিটির জন্য মঙ্গল হবে।
সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সফরের প্রথম দিনের কর্মসূচি শুরু হবে শেখ হাসিনার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর সরকারপ্রধান আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এ বৈঠকে আফ্রিকায় নিযুক্ত ৯ দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেবেন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগে অংশগ্রহণ করবেন। এ ডায়ালগে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া এদিন মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপ নাইউসি, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডিলমা ভানা রউসেফ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাকিও লুলা ডি সিলভার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। আগামী শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রওনা হয়ে রোববার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যার।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও সাউথ আফ্রিকা-এই পাঁচটি দেশের অর্থনেতিক জোট হলো ব্রিকস। এবার জোহানেসবার্গে ব্রিকসের ১৫তম সম্মেলন বসছে।