স্বপ্ন পূরণ: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে যা জানা দরকার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩

এলিভেটেডের এক্সপ্রেসওয়ে। সংগৃহীত ছবি

রাজধানীবাসীর জন্য-সুখবর। অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়ে-যানজট পেরিয়ে ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকার এক প্রান্ত থেকে যাওয়া যাবে অপর প্রান্তে। আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় এক্সপ্রেসওয়েটির হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে সড়ক পরিবহনে নতুন মাত্রা পাচ্ছে বাংলাদেশ।

এর মাধ্যমে-বিভিন্ন জায়গা থেকে উড়ালসড়কে ওঠা-নামা যাবে। যানজট পেরিয়ে উড়ালসড়কে উঠে খুব কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে উড়ালসড়কের আরেক প্রান্তের গন্তব্যে।

এক্সপ্রেসওয়েতে-কোথা থেকে সড়কে উঠবেন আর কোথায় নামবেন;

যারা পুরান ঢাকা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড, সেগুনবাগিচা, শাহবাগ, ফার্মগেট থেকে এসে উড়ালসড়কে উঠতে চান, বিজয় সরণি ওভারপাস কিংবা তেজগাঁও এলাকায় যেতে হবে তাদের।বিজয় সরণি হয়ে র‍্যাংগস ভবন ভেঙে তৈরি ওভারপাসটিতে উঠে তেজগাঁওয়ে যাওয়ার আগেই উড়ালসড়কের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। আবার তেজগাঁও থেকে বিজয় সরণির দিকে আসতে ওভারপাসে আরেকটি সংযোগ রয়েছে ওঠার জন্য। রাজধানীর দক্ষিণ, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের মানুষের জন্য উড়ালসড়কে ওঠার এটিই সহজ পথ।

এছাড়াও যারা বনানী যেতে পারবেন, তারা বনানী রেলস্টেশনের সামনে দিয়ে উড়ালসড়কে উঠতে পারবেন।তবে উত্তর দিক থেকে এসে নামার জন্য মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেটগামী যানবাহনের সুবিধাজনক সহজ পথ ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড।

আরও পথ রয়েছে ঢাকা উড়ালসড়কে ওঠানামার। দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান- ১. হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা। ২. প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব। দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন নামার স্থান- ১. বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ। ২. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে। ৩. ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশে।

Nagad

উত্তর অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান- ১. বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর ও দক্ষিণ লেন। ২. বনানী রেলস্টেশনের সামনে।

উত্তর অভিমুখী যানবাহন নামার স্থান- ১. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে। ২. বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর সামনে বিমানবন্দর সড়ক। ৩. কুড়িল বিশ্বরোড ৪. বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে।

টোল দিতে হবে যত টাকা;

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চার ক্যাটাগরিতে টোল আদায় হবে। ক্যাটাগরি ১-এ থাকছে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) ও হালকা ট্রাক (তিন টনের কম); টোল ৮০ টাকা।

ক্যাটাগরি ২-এ থাকছে মাঝারি ট্রাক (ছয় চাকা পর্যন্ত), টোল ৩২০ টাকা। ক্যাটাগরি ৩-এ থাকা ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) জন্য দিতে হবে ৪০০ টাকা। ক্যাটাগরি ৪-এ সব ধরনের বাসের (১৬ আসন বা তার বেশি) টোল ১৬০ টাকা।

ঢাকা এলিভেটেডে এক্সপ্রেস ওয়ে। সংগৃহীত ছবি

তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে রয়েছে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। এর মধ্যে দুই ও তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তাই মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা নিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার সুযোগ নেই। গাড়ি নিয়ে গিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পথচারীরা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে ও চলাচল করতে পারবেন না।

এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা কত;

এক্সপ্রেসওয়েতে শুরুর দিকে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলার কথা বলা হলেও অবশেষে সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ কিলোমিটার। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আসতে প্রতিটি গাড়ির সময় ব্যয় হবে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট। ফলে বনানী, মহাখালী, জাহাঙ্গীরগেট, বিজয় সরণির ভয়াবহ যানজট থেকে মুক্তি মিলবে এ পথের যাত্রীদের।


১২ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট;

এই উড়াল সড়ক চালু হলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের কাওলা থেকে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটে আসা যাবে মাত্র ১২ মিনিটে। চলতি পথে থাকবে না কোনো স্পিড ব্রেকার বা কোনো ইউ-টার্ন। থাকবে না হুটহাট ডানে-বামে ওঠার কোনো রাস্তা। যে পথের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন নগরবাসী।

এদিকে আজ মোট র‍্যাম্প ৩১টি হলেও উদ্বোধন অংশে ওঠানামার জন্য মোট ১৫টি র‍্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে এয়ারপোর্ট দুটি, কুড়িল তিনটি, বনানী চারটি, মহাখালী তিনটি, বিজয়স্বরণী দুটি ও ফার্মগেট একটি। আজ ১৩টি র‍্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সারাদিন. ২ সেপ্টেম্বর