বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক-সর্দার সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ১২

লালমনিরহাট সংবাদদাতালালমনিরহাট সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক ও সর্দারের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ১০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুইপক্ষের সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। এতে কয়েক ঘণ্টা ধরে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় এই সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় স্থলবন্দর থেকে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুইপক্ষের উত্তেজনা থামাতে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন আছে।

আহতরা হলেন- বুড়িমারীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান (২৫), পন্ডিতপাড়ার জামিয়াল (৫৬), তেলিপাড়ার মো: বাবুল (৪৫), ব্যাঙকান্দার ফাতানুর (৪০), মধ্য খিলাপুরের মো: নুরনবী (২৩), বামনদলের আলী হোসেন (২৫), কইল্লাটারির মো: সুমন (২০),টোসা শেখ (৪০), গুচ্ছগ্রামের শরিফ উদ্দিন (৩০)ও মনিজুল(২৩), লিটন (৩০) এবং এশিয়ান টিভির পাটগ্রাম প্রতিনিধি এম এ কামাল (৪০)।

স্থানীয় জনগণ ও শ্রমিকরা জানান, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের পণ্য লোড আনলোডে শ্রমিকদের পাওনা টাকা শ্রমিক সর্দাররা আত্মসাৎ করেছেন দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে সেই পাওনা টাকা আদায়ে আন্দোলন করে আসছিলেন সাধারণ শ্রমিকরা। বেশ কয়েক দফায় মানববন্ধন আর অবরোধ করেন শ্রমিকরা। প্রতিবারই আশ্বাস দেওয়া হলেও সাধারণ শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো মজুরির বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে ফুঁসে ওঠেন শ্রমিকরা।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পণ্য লোড আনলোড বন্ধ করেন শ্রমিকরা। ফলে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ী আর ভারতীয় ট্রাক চালকরা।

পাওনা আদায় ও শ্রমিক সংগঠনের নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো পণ্য লোড আনলোড বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যান শ্রমিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায় সর্দার গ্রুপ। পরে তা লাঠিসোটা আর দেশি অস্ত্রের সংঘর্ষে রূপ নেয়। চলে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। দুই পক্ষই পাথর ছুড়ে মারে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে বলে দাবি স্থানীয়দের।

Nagad

এতে সাংবাদিকসহ ১২ জন আহত হন। আহতদের পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখান থেকে ১০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার নিরব গণমাধ্যমকে বলেন, আহতদের আনা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুই-তিনজন বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

বিকেল ৪টার দিকে পাটগ্রামের ইউএনও নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। আমি নিজেও দুপুর ১২টার পর থেকে অবরুদ্ধ ছিলাম। এসিল্যান্ডসহ পুলিশ বাইরে চেষ্টা করছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।

সারাদিন/১২ সেপ্টেম্বর/এমবি