বাংলাদেশে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমনওয়েলথভুক্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম-২০২৩ উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের এই অঞ্চলের ৩ বিলিয়ন মানুষের বাজার পেতে বিনিয়োগ চেয়েছেন।
আজ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেডআই ফাউন্ডেশনের অংশীদারত্বে কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (সিডব্লিউইআইসি) আয়োজিত এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, দুই দিনের এই সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগ প্রসারের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে। এ ফোরাম অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অর্জন ও গতিশীল শিল্পখাতের সম্ভাবনা প্রদর্শন করবে এবং প্রতিশ্রুতিশীল দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করার চেষ্টা করছি, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও আরামদায়ক করে তুলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বাজারের কেন্দ্রস্থলে। এছাড়া, আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ। যার বৃহৎ অংশ যুবসমাজ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের স্বচ্ছল জনগোষ্ঠির সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি। ফলে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজারে পরিণত হবে বাংলাদেশ।
সরকার প্রধান বলেন, ‘এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ অন্যান্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশের উন্নয়ন যাত্রায় অংশ নিতে আগ্রহী দেশ, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে পুনঃবিনিয়োগ থেকে। এ থেকে প্রমাণ হয় বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ বিদ্যমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিডব্লিউইআইসি’র চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া এবং কমনওয়েলথ দেশগুলোর কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ প্রসারের লক্ষ্যে ২০২২ সালে প্রবর্তিত দ্বিতীয় ‘কমনওয়েলথ-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। উগান্ডার ‘ইকো ব্রিকস’ পুরস্কার বিজয়ী হওয়ায় এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে এই পুরস্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
শুরুতেই বাংলাদেশে কমনওয়েলথ ব্যবসা ও সুযোগের ওপর একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দুই দিনব্যাপী ফোরামে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা ১২টিরও বেশি সেশনে অংশ নিচ্ছেন।
কমনওয়েলথ হলো ৫৬টি দেশের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যা অভিন্ন মূল্যবোধ দ্বারা একত্রিত হয় এবং বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের আবাসস্থল। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে।
সারাদিন. ১৩ সেপ্টেম্বর