সাময়িক বরখাস্ত হারুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩

ফাইল ছবি

ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, এডিসি হারুনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে যা করার, সেটি পুলিশ করেছে। এখন মামলা-তদন্ত—এগুলো একটি প্রক্রিয়ায় হবে। তাৎক্ষণিকভাবে যেটা দরকার ছিল, তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, আমার জানামতে, ভুক্তভোগীরা এখনও মামলা করেননি। ভুক্তভোগীরা মামলা করলে তার তদন্ত হবে। তবে, যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, তাই বিভাগীয় মামলা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক এক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তারা একটা প্রোপোজাল দিয়েছিল এবং সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনও কনক্রিট একটা প্রোপোজাল আমরা পাইনি। আমরা যেটুকু জানি, এ ধরনের আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়ে এটা তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইপ্লিমেন্ট করবে, আমাদের প্রতিনিধি আলোচনার সময় ছিল। আমি যতটুকু শুনেছি এই আলোচনা হয়েছে। আলোচনাটা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, এখনও আমাদের কাছে বিস্তারিত কিছু আসেনি।

প্রস্তাব কে দিয়েছে, এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে অনেকেরই বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছে। যেখানে এ চুক্তি হয়েছে, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। এগুলোর প্রক্রিয়ায় আইন মন্ত্রণালয়ের লেজেসলেটিভ উইং ধারাবাহিকভাবে তাদের কাজ করছে। সেই কাজগুলো শেষ করার পর এই চুক্তিটা সম্পন্ন হওয়ার একটা পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এখনও আমাদের কাছে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে) প্রোপোজাল আসেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এটা ভালো প্রোপোজাল, এটা হলে দুই দেশই উপকৃত হবে।

এদিকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের (পুলিশ-১) প্রজ্ঞাপনে হারুনকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে এ আদেশ জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত এবং পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত) হারুন-অর-রশীদকে রংপুর রেঞ্জে ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হলো।

Nagad

পুলিশের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুনের আড্ডা দেওয়া নিয়ে গত শনিবার রাতে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, হারুনের সঙ্গে শাহবাগের একটি হাসপাতালে পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তা আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী হাজির হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান।

এ ঘটনায় হারুন-অর-রশীদকে গতকাল রোববার দুপুরে এডিসি হারুনকে ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় তাকে এপিবিএনে বদলি করা হয়। পরে গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর মঙ্গলবার তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।

একইদিন এ ঘটনায় মুখ খোলেন এডিসি সানজিদা আফরিন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বক্তব্যে তিনি তার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের ওপর অনেকটা দায় চাপান। বলেন, ‘আমার স্বামীই হারুন স্যারকে (হারুন অর রশিদ) প্রথমে আঘাত করেছেন।’…‘উনি (স্বামী) আসলে ওখানে কী করছিলেন কেন গিয়েছিলেন, আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন।’

হারুনের মারধরে আহত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন। তার কাছে গত মঙ্গলবার হারুন-অর-রশীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বছেন, ‘পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেব, মামলা করব কি-না।’ যদিও হারুনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে তিনি তার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে, দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান ছাত্রলীগের এই নেতা।