ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলা, নিহত বেড়ে ৫৩২
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে। হামলা-পাল্টা হামলার পর সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ।
রোববার (৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে এ তথ্য জানা গেছে।


ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে হামাসের চালানো হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ হাজার ৬০০ ইসরায়েলি। এর ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের আটক করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। হামাস বলেছে, আটক ইসরায়েলিদের সংখ্যা জেরুসালেম যা জানে তার চেয়েও অনেক বেশি।
এই হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। আজ আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ‘দখলদার সন্ত্রাসী ও দখলকারীদের’ বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের।
মিশর
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এই উত্তেজনা বৃদ্ধির ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।দেশটি ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে এবং ‘বেসামরিক নাগরিকদের আরও বিপদের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে’ আহ্বান জানিয়েছে।
ইরান
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির এক উপদেষ্টা বলেছেন, ইরান ফিলিস্তিনিদের হামলাকে সমর্থন করছে।ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, খামেনির উপদেষ্টা রহিম সাফাভি বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে থাকব।
কুয়েত
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে কুয়েত এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাতার
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে চলমান সহিংসতার জন্য ইসরায়েল একাই দায়ী।দেশটি উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে এবং হামাসের এই হামলার অজুহাতে গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় বাধা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরব
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, তারা অবিলম্বে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।সৌদি সরকারের ভাষ্য, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি গ্রুপ এবং ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মধ্যকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, যা বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে অনেক বেশি সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে।’
তুরস্ক
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমরা সবপক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি বার্তা সংস্থা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং গুরুতর পরিস্থিতি এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।’
হিজবুল্লাহ
লেবাননের সংগঠন হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, তারা গাজার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৯৭ জন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোরে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হাজার হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে হামাস। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে এখনও তাদের হামলা-পাল্টা হামলা চলছে।