‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২৩

রাজধানীর বিজয় সরণিতে নবনির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় এ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন তিনি।

এই প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। ভাস্কর্যের প্রাচীরের ম্যুরালে খোদাই করে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তি সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন। পরে তিনি উপস্থিত স্কুল শিক্ষার্থী এবং সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।

উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাস্কর্যের গায়ে লেখা আছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’, তাই এটি শুধু একটি ভাস্কর্য নয়, এটি একটি ইতিহাস।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে আজ আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। ঘাতকরা তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই তার স্বপ্ন পূরণে কাজ করে আসছি।

Nagad

শেখ হাসিনা বলেন, এই মৃত্যুঞ্জয় প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নামে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে, যা ২০২১ ও ২০২২ সালের বিজয় দিবসের প্যারেডে প্রদর্শিত হয়েছিল।

সরকার প্রধান বলেন, ‘১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষা বাংলার অধিকার হরণ করার চেষ্টা হয়েছিল তখর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধু এর প্রতিবাদ এবং আন্দোলন শুরু করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, এর ধারাবাহিকতায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সেই সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।


জাতির পিতা তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে এই স্বাধীনতা ও যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, যুদ্ধ করেছে এবং বিজয়ী হয়েছে।

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, এবং একটি উন্নয়নশীল জাতির মর্যাদা পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে সমুন্নত রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক। আমাদের শিশুরাই স্মার্ট বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে, বাংলাদেশ পরিচালনা করবে। এভাবেই তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে।’

শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি কথা (আপনাদের) মনে রাখতে হবে যে শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। অর্থ, সম্পদ কিছুই সম্পদ নয়। (আসল) সম্পদই একমাত্র শিক্ষা। শিক্ষা ভালোভাবে গ্রহণ করলে, কেউ তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না ছিনতাইও করতে পারবে না, এটা তোমার কাছেই থাকবে। আর শিক্ষা থাকলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করা যায়।’

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।