ঝুঁকিপূর্ণ খেলা দেখিয়েই চলে তার সংসার

বৈদ্যুতিক কাচের টিউবলাইট মুখে ভরে চিবিয়ে কচ-কচ করে চিবিয়ে খাচ্ছেন নির্দ্বিধায় । এই খেলা মেষ করে আগুন মোমবাতিতে ধরিয়ে মুখে পুরে নিচ্ছেন আবার কখনো খাচ্ছেন কেরোসিন তেলের জ্বলন্ত আগুন। কি আজব ঘটনা। তিনি এমন ঝুঁকিপূর্ণ খেলা দেখান ঝিনাইদহের বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামে-পল্লীতে ঘুরে ঘুরে । দীর্ঘ ৩০ বছর জীবিকার তাগিদে বেছে নিয়েছেন এসব ভয়ংকর সব খেলা। এভাবেই পরিবার চলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ঢাকালে পাড়ার বাসিন্দা সেলিম সরকারের।

সেলিম সরকারের দেখানো খেলা দেখে মুগ্ধ দর্শক মঞ্জুরুল করিম বলেন, এরকম আশ্চর্যজনক খেলা আমি আমার জীবনে কখনো দেখিনি। নিজেকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে যে, আগুন ও কাচ মুখে দিয়েও তার মুখের কিছু হচ্ছে না। তার খেলা দেখে এখানে উপস্থিত সবাই আমার মত অবাক হয়েছেন। সকলেই কম বেশি তাকে খেলা দেখানোর জন্য টাকাও দিয়েছেন।

আশ্চর্যজনক খেলা দেখানো সেলিম সরকার জানান, আমি ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন হাট বাজারে এভাবে খেলা দেখায় ।আমার খেলা দেখে দর্শকরা খুশি হয়ে যা দেই তাতে আমার সংসার চলে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও বউ বাচ্চা নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য এই পেশা আমাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয়েছে। পড়াশুনা খুব একটা এগুইনি । তাই ছোটবেলা থেকেই শুরু করেন এই খেলা । এখানে একটি টেকনিক আছে । কিন্তু মাঝে মধ্যে কষ্ট তো হয়ই । এ বাদে আর কিছু শিখিনী । ২ বাচ্চাে বৌ নিয়ে আমার সংসার । সবাইকে ভালো রাখতে অনেক কিছুই করতে হয় । সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছি ।

তিনি আরো জানান, দৈনিক আয়ের কোন ঠিক ঠিকানা নেই । কোন দিন কিছুই হয় না আবার কোন দিন হাজার পার হয়ে যায় । হাট-বাজারে প্রতিনিয়ত মজমা বা লোক জমায়েত করে এই খেলা দেখানোর চেষ্টা করি । জানি ঝুঁকিপূর্ণ তারপরও জীবিকার তাগিতে করতে হয় ।

তিনি হাসতে হাসতে বলেন, এ পেশায় অবশ্যই আমার ওস্তাদ আছে । তবে তাদের কথা বলা যাবেনা । দিনের পর দিন, মাসের পর মাস লেগেছে এই খেলা শিখতে । দেশের বহু জেলায় ঘুরেছি । অনেক বড় মজলিসে খেলা দেখাতে ভালো লাগে । মজমা ছোট হয়ে গেলে মন খারাপ হয়ে যায় । আসলে সবদিনতো আর একরতম হয় না।

সারাদিন. ১৩ নভেম্বর

Nagad