ডায়াবেটিস দিবস আজ, জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২৩

আজ (১৪ নভেম্বর) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস । ডায়াবেটিস দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।’ অর্থাৎ ডায়াবেটিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে একে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মোকাবিলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে- অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে, স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কাজেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে এবং তা মোকাবিলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে তাই জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদেরকে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য খাওয়া, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।’

১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন (আইডিএফ) ১৪ নভেম্বরকে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৭ সাল থেকে পৃথিবীজুড়ে দিবসটি পালন শুরু হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ নভেম্বর ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব করে। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘে এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন-ও পৃথক বাণী দিয়েছেন। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ হলো একটি গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা। যখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দীর্ঘসময় ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, তখন এই সমস্যায় আক্রান্ত হয় মানুষ। অনেকে আছেন ডায়াবেটিস হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে বুঝতেই পারেন না, কিন্তু অকারণেই শুকিয়ে যান, ক্লান্তি আর অবসাদবোধ করেন।
যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে-

Nagad

ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা, দুর্বল লাগা, ঘোর ঘোর ভাব আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া, মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া, কোনো কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া, শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলে দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা, চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব, বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা এবং চোখে কম দেখতে শুরু করা।

নিয়ন্ত্রণে যা যা করতে হবে-

যারা যত বেশি শারীরিক পরিশ্রম করবেন, প্রতিদিন যদি অন্তত ১০ হাজার কদম কেউ হাঁটেন, তাহলে ডায়াবেটিস হলেও সেটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। রিফাইন করা চিনি এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া অন্যান্য খাওয়াদাওয়ায়ও রাশ টানতে হবে। সেক্ষেত্রে কী খাওয়া যাবে আর কী খাওয়া যাবে না, এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইপ-২ ধরনের ডায়াবেটিসের ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই আগেভাগে সতর্ক থাকলে, শারীরিক পরিশ্রম করলে এবং খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ আনলে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু একবার ডায়াবেটিস হয়ে গেলে আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি।