মানবতাকে রক্ষায় সব ধরনের যুদ্ধ ও সংঘাতকে না বলুন : প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২৩

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানবজাতি ও মানবতাকে বাঁচাতে হলে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সব ধরনের যুদ্ধ ও সংঘাতকে কঠোরভাবে ‘না’ বলতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ ও মানবতাকে রক্ষায় সব ধরনের যুদ্ধ ও সংঘাতকে কঠোরভাবে ‘না’ বলুন। এই বিশ্বায়নের বিশ্বে এটা নিশ্চিতভাবেই সহজ।

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ লিডার সামিটে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুরক্ষিত ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বর্তমান যুদ্ধজনিত নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী মানবিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে আমরা ফিলিস্তিনে ৫ হাজারের বেশি শিশুসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষকে নির্মম হত্যা ও মর্মান্তিকভাবে গণহত্যা করতে দেখছি।

সরকারপ্রধান বলেন, এইসব জঘন্য হত্যাযজ্ঞ গোটা বিশ্বকে হতবাক করেছে ও বিশ্বব্যাপী দুর্দশাকে আরও তীব্র এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে মন্থর করেছে।

Nagad

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমি আজ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত সব সম্মানিত বিশ্ব নেতার প্রতি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির এক সুরে আওয়াজ তুলতে এবং এ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অবিলম্বে মানবিক ত্রাণ পাঠাতে আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৎ প্রতিবেশী-সুলভ সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ও বিশ্বব্যাপী এর প্রসার একটি ভালো সূচনা হতে পারে। এ লক্ষ্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারতের চমৎকার সম্পর্কের প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যা ‘প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিবেশীরা অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা ও স্থল সীমানা মীমাংসার মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছি।

বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বিশ্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আনন্দিত যে গত এক বছরের জি২০ প্ল্যাটফর্মে আমাদের আন্তরিক আলোচনা, বিশেষ করে নেতাদের এ শীর্ষ সম্মেলন আমাদের মধ্যে উদ্দেশ্য ও দায়িত্ববোধের সঞ্চার করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের বিশ্ব পরিবারের সুস্থতা নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, সেই চেতনায় আমি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে এক মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিককে (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসনে আপনাদের আন্তরিক সমর্থন চাই। আমি বিশ্বাস করি, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ফলপ্রসূ হবে এবং এটি বাস্তব পদক্ষেপে রূপান্তরিত হবে।

গত সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফলকে এগিয়ে নিতে আজকের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, জি২০ নয়াদিল্লি নেতাদের ঘোষণা গ্লোবাল সাউথের প্রকৃত উদ্বেগ ও সমস্যাকে প্রতিফলিত করে।

তিনি বলেন, আমি আনন্দিত যে, নেতারা নয়াদিল্লিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে বিশেষ করে, যেগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, প্রযুক্তি রূপান্তর, ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো ও নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত, উন্নয়নের বিভিন্ন চাহিদা পূরণে বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছেন, একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এটি অপরিহার্য।