মোংলা বন্দরের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১২:২০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৩

মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে। এছাড়া বন্দর চ্যানেলে নাব্যতা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণসহ কার্গো মোঃও কন্টেইনার সংরক্ষণের সুবিধাদি বৃদ্ধি এবং আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা হবে। এছাড়া আধুনিক কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জয়মনিরগোলে কার ইয়ার্ড নির্মাণ, জয়মনিরগোলে মাল্টি-পারপাস জেটি নির্মাণ, আকরাম পয়েন্টে ভাসমান জেটি নির্মাণ (সমীক্ষায় সুপারিশকৃত হলে), হিরণ পয়েন্ট পাইলট ষ্টেশনের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং জ্যাফর্ড পয়েন্টে লাইট হাউজ ও ভবন নির্মাণ, যাবতীয় সুবিধাদিসহ হ্যালিপ্যাড ও হ্যাঙ্গার নির্মাণ ও হেলিকপটার ক্রয়, উদ্ধারকারী জলযান সংগ্রহ করা হবে।
অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (জিটুজি প্রকল্প), মোংলা বন্দর চ্যানেলে ৫ বছর মেয়াদী সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প, পশুর চ্যানেলে নদী শাসন এবং মোংলা বন্দরের আরও সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরের চ্যানেলে ৮ দশমিক ৫ সিডি গভীরতা অর্জিত হবে। এতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। এছাড়া মোংলা বন্দরে বার্ষিক প্রায় আট লক্ষ টিইউজ কন্টেইনার, চার কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা সৃষ্টি হবে।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন মেয়র ও বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বিভাগীয় প্রধানসহ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বন্দর সদর দপ্তর মোংলা ও খুলনাস্থ বন্দর এলাকায় আলোকসজ্জা করা হয়। রাত ১২ টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশী, বিদেশী সকল জাহাজে একমিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়। বন্দরের অগ্রগতি কামনা করে সকল মসজিদে দোয়া, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় কবুতর ও বেলুন উড়ানোর পরে কেক কাটা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর মোংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে এবং বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে কাজ শুরু করে। ফলে ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হতে থাকে, যার কারণে প্রতি বছর বিদেশী জাহাজ, কার্গোহ্যান্ডলিং গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

আগামী দিনে মোংলা বন্দর আরও কর্মচঞ্চল ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে উল্লেখ তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ী, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল , পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, “মোংলা বন্দরে চলমান ড্রেজিং এর ফলে সম্প্রতি ৬০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মানা সরাসরি মোংলা বন্দরে আগমন করে। এছাড়াও প্রথম বারের মতো বন্দর জেটিতে ৮.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়েছে। ২০২২-২৩ র্অথবছরে বন্দরে ৮২৭টি বাণজ্যিকি জাহাজ আগমন করে ও ৯৯.০৫ লক্ষ মে.টন কার্গো, ২৬৫৮৩ টিইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, ১৩ হাজার ৫৭৬ টি গাড়ি আমদানি এবং ৩০,২৪১.৬৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পিডি-৪(৪৮)/৫০/১ সংখ্যক গেজেট নোটিফিকেশন বলে ১ ডিসেম্বর ১৯৫০ সালে চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি এ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে

Nagad