দাম বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজ বিক্রি, দাম ২২০-২৪০ টাকা
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে ফের নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যের বাজার।
বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। বাজারভেদে এই দাম একেক জায়গায় একেক রকম। ডাবল সেঞ্চুরি পার করে ২৪০ পর্যন্ত ঠেকা পেঁয়াজের বিক্রি কমেছে খুচরা বাজারে। খোদ খুচরা বিক্রেতারাই বলছেন, আগে যেখানে পাড়া মহল্লার দোকানে দিনে ৩০/৪০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো, সেখানে দাম বেড়ে যাওয়ার পর এখন ১৫/২০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করাই কঠিন হয়ে গেছে।


রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ধোলাইপাড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখানে ২২০-২৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা দরে। দোকানভেদে দামের তারতম্য রয়েছে এই বাজারে।
অনলাইন শপ চাল ডাল ডটকম, স্বপ্ন, ডেইলি শপসহ অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মেও পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছে ২১৯ টাকা।
এ অবস্থায় পেঁয়াজের দাম বাড়তি হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানগুলোতে পেঁয়াজ কেনা ও বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। কারণ এত বেশি দাম হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনছেন অল্প পরিমাণে।
রাজধানীর মিরপুর-শেওড়াপাড়া এলাকার মুদি দোকানি ফরিদুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ দোকানেই আগের পেঁয়াজ ছিল কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ার খবর পেলে খুচরা ব্যবসায়ীরা আগের কম দামে কেনা পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আমাদের মত অনেক ব্যবসায়ী যারা নতুন করে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে এনেছি, তারা বেশি দামেই বিক্রি করছি। কিন্তু অন্যরা আগের কম দামে কেনা পেঁয়াজই বেশি দামে বিক্রি করছে।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার দেশি পেঁয়াজ ছিল ১৩০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল ১১০ টাকা কেজি। সে পেঁয়াজ রোববারে এসে দেশিটা ২২০ থেকে ২৪০ আর ভারতীয় পেঁয়াজ ২০০ থেকে ২২০ টাকা হয়েছে। ফলে ২ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকার বেশি। পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় কেনার আগ্রহ হারিয়েছে ক্রেতারা। সবমিলিয়ে আগের চেয়ে পেঁয়াজ বিক্রি অনেক কমে গেছে। আগে যে ক্রেতা ২ কেজি পেঁয়াজ নিতো সে ক্রেতাই এখন আধা কেজি, এক কেজি করে পেঁয়াজ নিচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী আড়তের ব্যবসায়ী শামসুল আলম বলেন, ভারত পেঁয়াজ পাঠানো বন্ধ করার খবর পাইয়া সাপ্লাই কইমা গেছে। এহন সাপ্লাই কমলে বাজারে তো দাম বাড়বই। আমরা আড়তে ২২০ টাকা দরে বেচাতাছি। যা মনে হইতাছে দাম আরও বাড়বো।
এদিকে, পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সারাদেশে এ অভিযানে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সরকারি এই তদারকি সংস্থাটি।
জানা গেছে, বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের বেশি। গত অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ টনের মতো। তবে ক্ষেত থেকে তুলে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। ফলে প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ লাখ টন আমদানি করতে হয়, যার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। এ জন্য ভারত পেঁয়াজের ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে সেসময় ৩০০ টাকার বেশি হয়েছিল পেঁয়াজের কেজি।