১৮ বছর পর বাড়ী ফিরলো বাক প্রতিবন্ধী নারী, আপ্লুত পুরো গ্রাম
দেড় যুগ পর বাড়ী ফিরলো বাক-প্রতিবন্ধী চান্দনা খাতুন । ২০০৫ সালে স্বামীকে খুঁজতে বাড়ী থেকে বের হন তিনি । এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। সবজায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিবারের সদস্যরা একরকম ভেবেই নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন । বছরের প্রথম দিনে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে যশোর ট্রেন ষ্টেশনে দেখা মেলে তার । চান্দনাকে ফিরে পেয়ে পুরো পরিবারসহ গ্রামে চলছে আনন্দের বন্যা ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চান্দনা খাতুন ঝিনাইদহের শৈলকূপার ফুলহরি ইউনিয়নের দেবী নগর গ্রামের মৃত মজিবর শেখের স্ত্রী । ঘটনা শুনতে অবাক লাগলেও হারিয়ে যাওয়ার দেড় যুগ পর বাড়ী ফিরেছেন সত্তোর বছরের চান্দনা খাতুন । দুই ছেলে-মেয়ের জননী চান্দনা স্বামীকে খুঁজতে বাড়ী থেকে বের হয়েছিলেন ২০০৫ সালে । আর ফিরে আসেননি বাক-প্রতিবন্ধী চান্দনা ।


চান্দনা খাতুনের চাচাতো- মামাতো ভাইয়েরা জানান, একসাথে খেলার সাথী আমাদের এই বোন । কী যে আনন্দ হচ্ছে তা ভাষায় প্রকার করার মতো না । ও বোবা কোন কথা বলতে পারে না । এরপর স্বামী হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে ওর মাথায় একটু গণ্ডগোল হয়ে যায় । সবাইকে এই চিনতে পারছে আবার পারে না ।
একমাত্র ছেলে ফরিদ শেখ জানান, গত ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনে পরিবারের এক আত্মীয় ডাক্তার দেখাতে যেয়ে যশোর রেল ষ্টেশনে তাকে দেখতে পান । হারিয়ে যাওয়া মা-কে খুঁজতে আমরা এমন কোন প্রক্রিয়া যেমন পত্রিকায় নিখোঁজ সংবাদ দেওয়া, বিভিন্ন থানায়, হাসপাতালে ও কবিরাজের কাছে পর্যন্ত গেছেন । কিন্তু কোথাও তাকে আর পাওয়া যায়নি । শেষ পর্যন্ত একপ্রকার হাল ছেড়ে দেন সন্তানরা । তারা ভেবেই নিয়েছিল তিনি মারা গেছেন । এখনকার গল্প শুধুই বাঁধভাঙা আনন্দের ।
একমাত্র মেয়ে ঝর্না খাতুন জানান, যার বাবা-মা নেই তারাই জানে কষ্টটা কেমন । মাকে শুধু খুঁজতাম । এখানে-ওখানে, যেখানে যেতাম সেখানেই কোন বয়স্ক মহিলা দেখলেই মনে হতো এই বুঝি মাকে পেয়ে গেলাম । এখন মায়ের বাড়ী আসার খবর জানাজানি হলে গ্রামবাসীসহ পুরো এলাকার মানুষ দলে দলে একনজর দেখতে ভিড় করছে বড় ভাইয়ের বাড়ীতে ।
চান্দনা খাতুনকে কেমন আছেন জানতে চাইলে, মাথা নেড়ে জবাব দেন খুব ভালো আছেন । হাত নেড়ে জানান দেন, আর বাড়ী ছেড়ে যাবেন না । দুই সন্তানকে বুকে টেনে নেন তিনি