দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১০ম
বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০২৩ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। যেখানে দেখা গেছে-দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম। ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম।
টিআই বলেছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৪, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গতবার বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ২৫। ২০২২ সালে ২৫ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। আর তালিকায় দেশ হিসেবে ছিল ১৪৭ তম অবস্থানে।


এবার সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে আছে আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরান, লেবানন ও জিম্বাবুয়ে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর কার্যালয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, করাপশন পারসেপশনস ইনডেক্স বা সিপিআই ২০২৩ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২৪ যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দুই ধরনের স্কোরের হিসাবেই ২০২২ এর তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের অবস্থান দুই ধাপ অবনমন হয়েছে। স্কোর প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ক্রম অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম। নিম্নক্রম অনুসারে ১০ম স্থানে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ১০ম অবস্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরান, লেবানন ও জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ এবারও আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সূচকে ৯০ স্কোর পেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে ডেনমার্ক। ৮৭ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ফিনল্যান্ড এবং ৮৫ স্কোর পেয়ে তৃতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ড। ১১ স্কোর পেয়ে ২০২৩ সালে তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে সোমালিয়া। ১৩ স্কোর পেয়ে নিম্নক্রম অনুযায়ী যৌথভাবে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া ও ভেনিজুয়েলা এবং ১৬ স্কোর পেয়ে তৃতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে ইয়েমেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল ও পাকিস্তানের স্কোর যথাক্রমে ১ ও ২ পয়েন্ট উন্নতি হয়েছে এবং অবশিষ্ট পাঁচটি দেশের স্কোরই ১ থেকে ৪ পয়েন্ট অবনমন হয়েছে। এরমধ্যে আফগানিস্তানের স্কোর কমেছে ৪ পয়েন্ট, শ্রীলঙ্কার ২ পয়েন্ট এবং মালদ্বীপ, ভারত ও বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ১ পয়েন্ট করে।
ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও নেপালের অবস্থানের যথাক্রমে ৭ ধাপ ও ২ ধাপ উন্নতি হয়েছে। অবশিষ্ট ৬টি দেশের অবস্থানের ১ থেকে ১৪ ধাপ পর্যন্ত অবনতি হয়েছে। এরমধ্যে শ্রীলঙ্কার ১৪ ধাপ, আফগানিস্তানের ১২ ধাপ, ভারত ও মালদ্বীপের ৮ ধাপ, বাংলাদেশের ২ ধাপ এবং ভুটানের অবস্থানের ১ ধাপ অবনমন হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র ভুটান ছাড়া বাকি সাতটি দেশই সূচকের গড় স্কোর ৪৩-এর কম পয়েন্ট পেয়েছে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা উদ্বেগজনক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম, সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।