দরিদ্র ও প্রান্তিক জেলেদের কল্যাণে কাজ করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ : ভূমিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৭:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন- জলমহাল ব্যবস্থাপনায় সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য কেবল রাজস্ব আদায় নয়, বরং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের কল্যাণ ও জীবিকা উন্নয়ন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদান সংক্রান্ত কমটির ৭৬তম সভায় সভাপতিত্ব করার সময় ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এই কথা বলেন। ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমান এসময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়, সমবায় অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। ইজারার জন্য প্রস্তাবকৃত জলমহাল সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকবৃন্দ সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

সভায় দরিদ্র ও প্রান্তিক জেলেদের কল্যাণে কাজ করতে সরকারের অবিচল অঙ্গীকারের ব্যাপারে জোর দিয়ে নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, আমাদের অবশ্যই আইনের মধ্যেই কাজ করতে হবে, তবে একইসাথে স্থানীয় জেলেদের কল্যাণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে।

এসময়, অর্থনৈতিক বিবেচনা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বের উপর জোর দেন ভূমিমন্ত্রী । ভূমিমন্ত্রী মৎস্য খাতের উপর নির্ভরশীলদের জীবনযাত্রার জন্য তাদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি টেকসই মৎস্য আহরণের ব্যাপারে তাঁদের উৎসাহিত করার জন্য বলেন। এমসময়, প্রান্তিক পর্যায়ের মৎস্যজীবীদের মধ্যে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমান জানান, একবার অনলাইনে আবেদন করে কোনো কারণে ইজারা না পেলে পরবর্তীবার পুনঃআবেদনের সময় পুনরায় অনলাইনে আবেদন করা বাধ্যতামূলক নয়। এক্ষেত্রে, আবেদনকারীর সুবিধা বিবেচনা করে পুনঃআবেদনের সময় ম্যানুয়াল আবেদন গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, আজ জয়পুরহাট, নেত্রকোনা, যশোর, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে ১২১ টি জলমহাল ইজারার অনুমোদন দেওয়া হয়।

Nagad

প্রসঙ্গত, land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েব পোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাচ্ছে। এছাড়া, জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েবপোর্টাল থেকেই জানা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিল, হাওর, বাওর, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে ছোটো-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। বেশ কয়েকটি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইজারা-বিহীন রাখা হয়েছে যেমন, দিনাজপুরের রামসাগর, সিরাজগঞ্জের হুরাসাগর। মাছ সংগ্রহের অভয়াশ্রম ঘোষিত জলমহালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওড়, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওড় ইত্যাদি। জলমহাল দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষ পূরণের অন্যতম উৎস।

‘উন্নয়ন প্রকল্পে’ ৬ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরণের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন ‘জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন ‘উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। এছাড়াও জনস্বার্থে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জলমহাল হস্তান্তর করা হয়।