ম্যানেজারকে অপহরণের আগে কোটি টাকা চেয়েছিল কেএনএফ: র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণের আগে তার কাছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা এক কোটি টাকা চেয়েছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, নিজেদের কৌশল অবলম্বন করে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

আজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, সেদিন কেএনএফের ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করেছিল। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল, যার সবই লুণ্ঠিত। তারা ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের কাছে এক কোটি টাকা চেয়েছিল। বলেছিল, টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেবে। এজন্য তারা ম্যানেজারের কাছে ভল্টের চাবিও চায়। এ ছাড়া ব্যাংকে হামলার পর তারা ম্যানেজারের ল্যাপটপ নিয়ে গিয়েছিল। তারা ল্যাপটপ খুলে সাইবার হামলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার কৌশলে এসব এড়িয়ে যান। পরে তাকে অপহরণ করে বেথেল পাড়ার পাশ দিয়ে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা দিনে দুবার তাকে খাবার দিতো এবং মারধরও করেছে। কখনো কখনো তার চোখ বেঁধে দিতো, আবার কখনো খুলে দেওয়া হয়েছে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পরই তাকে উদ্ধারে আমরা মাঠে নামি। আমরা স্থানীয় জনগোষ্ঠী, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থা যারা আছে সবার সহযোগিতা নিয়েছি।

তিনি বলেন, তাকে উদ্ধারে আমরা বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করেছি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার একটা কৌশল আমাদের কাজে এসেছে। এরপর তারা নিজেদের মোটরসাইকেলের মাঝে বসিয়ে একটি স্থানে ব্যাংক ম্যানেজারকে রেখে গেছে।

ব্যাংক ম্যানেজারের ল্যাপটপ ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা সাইবার হামলার চালাতে চেয়েছিল বলেও জানান তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক ম্যানেজারকে জীবিত উদ্ধারের কারণে আমরা হার্ড লাইনে যাইনি। তবে আজকে থেকে আমরা সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করব বিভিন্ন বাহিনীর সহযোগিতায়।’

Nagad

তিনি বলেন, ‘কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো তারা আরও বড় ধরনের হামলা করতে পারে। সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না, সিসিটিভি ফুটেজ শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটে করে। এ সময় তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রও লুট করে। একই সঙ্গে মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে মুক্তি দিতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তাকে উদ্ধার করে র‌্যাব। এরপর শুক্রবার সকালে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।