স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যা যা করণীয় তার সব করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২৪

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে সেনা সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- যুদ্ধ চাই না, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। তবে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যা যা করণীয় তার সব করতে হবে।

এ সময় তিনি-জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যা যা করণীয় তা করতে তাগিদ দিয়েছেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামে আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্সের উদ্বোধন অনু্ষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। এ সময় কমপ্লেক্সে স্থাপিত আর্টিলারি জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এদেশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো সবার কাছে সুপরিচিত। এর মর্যাদা রক্ষা করে যুগোপযোগী ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনেও এদেশে এদেশের সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ অবদান রেখে অন্যান্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন উচ্চ প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার কথা জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এদেশের সশস্ত্র বাহিনী সারাবিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলবে তাদের পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্য নিষ্ঠা এবং অনুশীলন, প্রশিক্ষণ এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করবে। যেকোনো দেশে সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধে জয়ী হতে পারে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে। এদেশের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী কারো সাথে যুদ্ধ নয়, সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ।

Nagad

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির আধুনিকায়নে ইতোমধ্যে ফিল্ড আর্টিলারিতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক টাইগার এমএলআরএস, ১৫৫ মিলিমিটার সেলফ প্রপেলড আর্টিলারি গান নোরা ই-৫২, অত্যাধুনিক ওয়েপন লোকেটিং রাডার এবং সাউন্ড রেঞ্জিং সিস্টেম। পাশাপাশি এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক অরলিকন গান, শোরাড মিসাইল, ভি শোরাড মিসাইল এবং রাডার কন্ট্রোলড এয়ার ডিফেন্স গান।

সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক বিমান, হেলিকপ্টার, ইউএভি, চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক, আধুনিক এপিসি, ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল ও অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জাম।

সেনাবাহিনীর কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির আস্থার প্রতীক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। কর্মনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের কারণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসিত। জাতিসংঘ মিশনে আমাদের সৈনিকদের সামর্থ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সম্প্রতি অত্যাধুনিক লাইট আর্মাড ভেহিক্যাল ও মাইন রেসিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড ভেহিকেল সংযোজন করা হয়েছে।

এ সময় তিনি জাদুঘরে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অতিবাস্তব প্রতিকৃতি, মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব ব্যাটারির প্রথম গোলাবর্ষণকারী ঐতিহাসিক ৩.৭ ইঞ্চি হাউইটজার, আর্টিলারি রেজিমেন্টে ব্যবহৃত গোলাবারুদ ও সব কামানের প্রতিরূপ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে গোলন্দাজ বাহিনীর উল্লেখযোগ্য অপারেশনসমূহের গৌরবময় ইতিহাস অবলোকন করেন।

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব সময়ই প্যালেস্টাইনের পক্ষে ছিল, আছে থাকবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তিন বাহিনী প্রধান, সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তি, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন পদবির অফিসার, জেসিও, অন্যান্য পদবির সেনা সদস্য এবং মিডিয়া ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।