ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য যেসব শর্ত মানা বাধ্যতামূলক

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫

দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় বাংলাদেশের নাগরিকেরা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি পেতে পারেন, তবে অবশ্যই লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা কর্তৃক জারি করা ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬’ অনুযায়ী, লাইসেন্সের জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়।

লাইসেন্সের যোগ্যতা ও শর্ত
আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে। পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। প্রবাসী বা দ্বৈত নাগরিকদের জন্য আলাদা শর্ত রয়েছে।

আয়কর সংক্রান্ত শর্ত:

লাইসেন্সপ্রত্যাশীকে অবশ্যই আয়করদাতা হতে হবে।

আবেদনপূর্ববর্তী টানা ৩ বছর আয়কর প্রদান করতে হবে।

Nagad

পিস্তল, রিভলভার বা রাইফেলের লাইসেন্স পেতে হলে প্রতি বছর সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে।

শটগানের ক্ষেত্রে প্রতি বছর সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা আয়কর প্রদান করতে হবে।

আবেদন করার সময় এনবিআর-এর প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।

প্রবাসীদের জন্য শর্ত:

টানা ৩ বছর প্রতি বছর কমপক্ষে ১২ লাখ টাকা রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রমাণ দিতে হবে।
আয়কর দাখিলের প্রমাণসহ ব্যাংক প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।

কয়টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়?
নীতিমালায় বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে পারেন—একটি পিস্তল বা রিভলভার এবং একটি শটগান বা রাইফেল।

যারা আগেই দুটি অস্ত্রের বেশি লাইসেন্স পেয়েছেন, তারা সেগুলো বিক্রি, হস্তান্তর বা হারালে নতুন করে আর লাইসেন্স পাবেন না।

তবে, বাংলাদেশ শ্যুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের সুপারিশে নিবন্ধিত শ্যুটাররা সর্বোচ্চ তিনটি অস্ত্র রাখার অনুমতি পেতে পারেন।

অযোগ্যতার কারণ
কেউ ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত হলে তিনি লাইসেন্স পাবেন না।
কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে, সাজা শেষে ৫ বছর পার না হলে তিনিও অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

লাইসেন্সের জন্য আবেদন পদ্ধতি
নির্ধারিত ফরমে নিজ জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি) বরাবর আবেদন করতে হয়।

প্রাক-পরিচয় যাচাইয়ের জন্য পুলিশি তদন্ত হয়।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাক্ষাৎকার নিয়ে সামর্থ্য ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেন।

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের সব রেকর্ড সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে সংরক্ষিত হয়।

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ সরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বয়স ও কর সংক্রান্ত কিছু বিধানে ছাড় রয়েছে।