‘বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে’

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৪

বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন-বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় চীন। অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, কমসুদে ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ— এ চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন।

বুধবার (১০ জুলাই) বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় বিকেলে ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে এসব আশ্বাস দেন চীনা প্রেসিডেন্ট। পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

চীনা প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে দু’দেশের টেকনিক্যাল কমিটি যৌথভাবে কাজ করবে। শিগগির চীন থেকে টেকনিক্যাল কমিটি বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়ন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন আইকনিক স্থাপনা নির্মাণসহ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য চীনা প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: শি জিনপিংচীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে সেখানে চীনা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আহ্বান করেন তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আইটি ভিলেজগুলোতে চীনের বিনিয়োগ আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করবেন। আমসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির বিষয়ে আগ্রহ পুর্নব্যক্ত করেন শি জিনপিং।

Nagad

আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। এটিকে সামনে রেখে দু’দেশের কৌশলগত সম্পর্ক, বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন শি জিনপিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তোলার আগেই শি জিনপিং বলেন, আমি জানি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সর্বত্র সহায়তা করবে চীন।

মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজনে আরাকান আর্মির সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করে এ সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীন।

শি জিনপিং বলেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না চীন। আমরাও চাই না কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করুক।

আন্তর্জাতিক ফোরামে চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো এবং বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যেও একসঙ্গে কাজ করবো।

ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও তার প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে এই মুহূর্তে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্ধারিত চার দিনের সফর শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অসুস্থ থাকায় আজ রাতেই বেইজিং ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এর আগে সফরসূচিতে নির্ধারিত সব আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি সম্পন্ন করে নিয়েছেন তিনি।পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় আজ রাত ১০টায় বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।