আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ ঘোষণা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে আউয়াল কমিশন। পরে পদত্যাগ পত্রে সই করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানা গেছে।
হাবিবুল আউয়াল ছাড়া বর্তমান কমিশনের বাকি চার সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমানও পদত্যাগ করছেন বলে জানান সিইসি।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা পদত্যাগপত্র জমা দেব।
ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পদত্যাগের পক্ষে ছিলেন সিইসি। কিন্তু অন্য নির্বাচন কমিশনাররা এত দিন সায় দেননি। নিজ থেকে পদত্যাগ করা ঠিক হবে না বলে সিইসিকে বোঝান তারা। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল নির্বাচন ভবনে কমিশনাররা নিজেরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
বিগত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। এর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সরকারের পতনের পর প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিলোপ করে নতুন কমিশন গঠনেরও দাবি ওঠে। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজেদের অবস্থান ও করণীয় জানতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় আউয়াল কমিশন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মতো ইসির সংস্কার করা হবে বলে নিশ্চিত করছেন তারা। সে জন্য বেশ কয়েকদিন ধরেই তারা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা অফিস করলেও তাদের বিদায়ের প্রস্তুতিই প্রাধান্য পায়। শেষ সময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জরুরি কাগজপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে নেন তারা।
হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে এই কমিশনের পরিচালনায় গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া গত আড়াই বছরে দেড় সহস্রাধিক পদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন, উপনির্বাচন করেছে তারা।