২০২৪ সালে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে, আহতের সংখ্যা ১২,৬০৮
সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে দেশের সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬,৯৭৪টি দুর্ঘটনায় ৯,২৩৭ জন নিহত এবং ১৩,১৯০ জন আহত হয়েছেন। শুধু সড়ক দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৮,৫৪৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১২,৬০৮ জন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।


প্রতিবেদনে তিনি বলেন, রেলপথে: ৪৯৭টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত ও ৩১৫ জন আহত। নৌ-পথে: ১১৮টি দুর্ঘটনায় ১৮২ জন নিহত, ২৬৭ জন আহত, ১৫৫ জন নিখোঁজ। মোটরসাইকেল: ২,৩২৯টি দুর্ঘটনায় ২,৫৭০ জন নিহত ও ৩,১৫১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— বেপরোয়া গতি ও বিপজ্জনক ওভারটেকিং। ফিটনেসবিহীন যানবাহন। চালক ও পথচারীদের অসতর্কতা। ট্রাফিক আইন প্রয়োগে দুর্নীতি।
রাস্তার অব্যবস্থাপনা, যেমন ফুটপাত দখল এবং রোড ডিভাইডার অপর্যাপ্ত উচ্চতা। ২০২৪ সালে সড়কে ১.৫৪% দুর্ঘটনা, ৭.৫০% নিহত এবং ১৭.৭৩% আহতের সংখ্যা বেড়েছে ২০২৩ সালের তুলনায়।
সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ পথচারী, চালক এবং পরিবহন শ্রমিক। এছাড়া ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী, ১২৬ জন শিক্ষক, ৬৫৮ জন শিশু, ৪৮ জন সাংবাদিক, ১২ জন প্রকৌশলী এবং ১৭ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সড়ক নিরাপত্তার অভাব, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের চলাচল, এবং দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবহন ব্যবস্থার কারণে প্রাণহানি বাড়ছে। তিনি বলেন, “পরিবহনের কাঠামোগত উন্নয়ন এবং আইন বাস্তবায়ন ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।”
সুপারিশমালায় উল্লেখ করা হয়েছে—সড়ক নিরাপত্তায় বিশেষ বাজেট বরাদ্দ। গণপরিবহন সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা। রোড সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। আধুনিক ও নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, আবদুল্লাহ আল-জহির স্বপন, এবং যাত্রী কল্যাণ সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।