বাজেটে ভ্যাটের ওপর নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা: অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫

দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পথে চাঁদাবাজিকে অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে দেখছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আগের চাঁদাবাজদের পাশাপাশি রাজনীতিতে নতুনভাবে উঠে আসা গোষ্ঠী এবং স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন চাঁদাবাজও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একটি ট্রাক মহাস্থানগড় থেকে ঢাকায় আসার খরচ ৫ হাজার টাকা হলেও চাঁদাবাজির কারণে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ১২ হাজার টাকায়। এটি সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করছে।” চাঁদাবাজি বন্ধ করা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য কঠিন বলে মন্তব্য করে তিনি জানান, রাজনৈতিক সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণের সুবিধা থাকলেও তাদের সে ধরনের সুযোগ নেই।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, গত দুই-তিন বছরে দেশে এমন উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা যায়নি। মেগা প্রকল্পের বিনিয়োগ থেকে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আসতে দেরি হওয়া, রেমিট্যান্স হ্রাস এবং চাঁদাবাজির কারণে এই পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে পারবো। তবে একেবারে ৫-৬ শতাংশে নামিয়ে আনা সহজ নয়।”

ভ্যাট ও কর সংক্রান্ত বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশ এখনো বিশ্বের অন্যতম কম কর আদায়কারী দেশ। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য করজাল সম্প্রসারণ করা। কর ফাঁকি রোধ এবং এনবিআরকে আরও ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে কর আদায় বৃদ্ধি করা হবে।”

তিনি আরও জানান, ‘আমরা বাজেটে ভ্যাটের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করবো। অধিকাংশ দেশে ন্যূনতম ভ্যাট ১৫ শতাংশ হলেও আমরা সেটি যুক্তিসঙ্গতভাবে রেশনালাইজ করার চিন্তা করছি।’

Nagad

অর্থ উপদেষ্টা জানান, করনীতি ও কর প্রশাসনকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এনবিআর কেবল কর সংগ্রহ করবে, আর নীতিনির্ধারণ করবে একটি স্বাধীন সংস্থা। তিনি বলেন, “এতে ব্যবসায়ীদের এনবিআরের কাছে ধর্ণা দেওয়া লাগবে না। একটি নির্ধারিত নীতির ভিত্তিতে কর ব্যবস্থা পরিচালিত হবে।”

সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল যেন সবাই পায়, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট। তিনি বলেন, “আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৫ শতাংশের কাছাকাছি। এটি যেন কৃষক, নারী কর্মী এবং ছোট ব্যবসায়ীদেরও উপকারে আসে, সে লক্ষ্যে কাজ করছি।”

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আয়ের বৈষম্যের চেয়েও সম্পদের বৈষম্য বেশি উদ্বেগজনক। দেশে-বিদেশে এক ব্যক্তির অসংখ্য ফ্ল্যাট-বাড়ি থাকা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে।’