সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ আজ, আসছে সুপারিশমালা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা হবে। একই সঙ্গে কমিশনগুলোর প্রধানরা পরবর্তী করণীয়, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কীভাবে এগোতে পারে, সে বিষয়ে সুপারিশমালা উপস্থাপন করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনুস বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেন। এসব কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের ১৫ দিন পর, গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করে। এরপর গত বুধবার জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

সরকার জানিয়েছে, আজ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণআন্দোলনের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গণআন্দোলনের পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকের তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই নির্ধারণ করা হবে।

গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংকালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত এ বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস। এতে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি থাকলে আলোচনা পবিত্র রমজান মাস পর্যন্ত চলতে পারে।

গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পর ছয়টি খাত সংস্কারের জন্য পৃথক কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন সংস্কার কমিশনে প্রধান করেন সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনে সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। দুদক সংস্কার কমিশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

এই কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার প্রধানের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং সদস্য সচিব হন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।

Nagad

শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার মাধ্যমে সংস্কারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইন ও সাংবিধানিক সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।