জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়কালে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়ে থাকতে পারে, আহত হয়েছেন হাজার হাজার।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় পরিচালিত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। নিরাপত্তা বাহিনীর শটগান ও সামরিক অস্ত্রের ব্যবহারে হাজারো মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। ১১ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।


প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগের সহিংস উপাদানগুলোর সঙ্গে মিলে পদ্ধতিগতভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যুক্ত ছিল।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র পুলিশ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও সেনাবাহিনী, র্যাব, ডিজিএফআই বা এনএসআই-এর সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ পর্যন্ত ৪৫৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান, ৩৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১৬৩ জন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, বিজিবি মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে
র্যাব তাদের কর্মকর্তাদের মূল বাহিনীতে ফেরত পাঠালেও কোনো ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, ডিজিএফআই, আনসার ও এনএসআই কোনো তদন্ত বা জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল জানায়, নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং, ইচ্ছাকৃত পঙ্গু করা এবং নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু।
এছাড়া, নিরস্ত্র নাগরিকদের বিরুদ্ধে এসকেএস, টাইপ-৫৬ ও বিডি-০৮ বন্দুক দিয়ে ৭.৬২ মিমি গুলি ছোঁড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থান দমনের নামে যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, তা আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল।