বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা: রেহমান সোবহান

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫

বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সমাজের বিভক্তির প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, যদি ঢাকা ক্লাব বা গুলশান ক্লাবের সদস্যদের ওপর জরিপ করা হয়, দেখা যাবে, প্রায় সবাই তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ান। নব্বই দশকে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করা অভিভাবকরাও এখন সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করাচ্ছেন। এমনকি মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরাও ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরনের বৈষম্য সমাজকে দ্বিখণ্ডিত করছে। ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে চলার পেছনে বাজার ব্যবস্থার (মার্কেট মেকানিজম) প্রভাব কাজ করছে। এই বৈষম্য দূর করে বিশ্বমানের সমতাভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী কেন্দ্রে ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই) আয়োজিত ‘শিক্ষার হালচাল ও আগামীর ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। আরও উপস্থিত ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলোর্মী প্রমুখ। সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কনসালটেশন কমিটির আহ্বায়ক ড. মনজুর আহমদ ও সিএএমপিইর উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপেও আমাদের মতো বৈষম্য ছিল। কিন্তু যুদ্ধের পর তারা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলে যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও একজন বাসচালকের সন্তান একই মানের শিক্ষা পেত। চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশও একই পথে এগোচ্ছে। আমাদেরও সবার জন্য সমান মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন পক্ষের দাবি প্রায়ই সাংঘর্ষিক হয়। এক পক্ষের দাবি মানলে অন্য পক্ষ অসন্তুষ্ট হয়। তবে সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে এবং কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Nagad

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, দেশের মাদ্রাসাগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আইন হলে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কেন নয়? রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এলে মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াও সঠিকভাবে উপস্থাপিত হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের ওপর অতিরিক্ত কাজের চাপ কমানো প্রয়োজন।