ছয় মাসে দেশে-বিদেশে ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুদক
পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সম্পদ জব্দে তৎপরতা চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে মোট ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সংস্থাটি।
দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট ১০ হাজার ৩১০ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৭১ টাকা এবং বিদেশে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৭ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও জব্দ করা হয়েছে।


দুদক জানায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির বিভিন্ন নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের এসব সম্পদ আদালতের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।
তবে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ আদৌ বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিদেশে থাকা সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং জব্দ প্রক্রিয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। এ বিষয়ে যথাযথ কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আরও অনেক নেতাকর্মী এবং ব্যবসায়ীর সম্পদ তদন্তাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহের পর তাদের বিরুদ্ধেও জব্দ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সম্পদ জব্দের ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার বিরোধী মতকে দমন করতে চাচ্ছে।
তবে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দুর্নীতি দমনে কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। যা কিছু করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ আইন মেনে এবং প্রাপ্ত অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে।
এ বিষয়ে আরও তদন্ত ও সম্পদ পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।