আছিয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন হোক: হাসনাত-সারজিস
মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশু আছিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। আজ ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। শিশুটির মৃত্যুর খবরে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শিশুটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।


এই দাবির পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তারা উভয়েই নিজেদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন— ‘আমাদের বোন আছিয়া আর নেই। আছিয়ার ধর্ষকদের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে ধর্ষকদের শাস্তির এক দৃষ্টান্ত স্থাপন হোক। বিচারহীনতা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা আমাদের আইনি কাঠামোকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। আছিয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে সেই বিচারব্যবস্থা পুনরায় জাগ্রত হোক। পুরো বাংলাদেশ বোন আছিয়ার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, লজ্জিত।’
শিশুটির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন—এ ঘটনা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। সেদিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় সংকটাপন্ন শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
শিশুটির মা জানান, তার মেয়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে তাকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
শিশুটির মৃত্যুতে সমাজের বিভিন্ন স্তরে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে এবং দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শিশু সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শিশুটির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে।