ভারত ওয়াকফ সংশোধন আইন পুনর্বিবেচনার আশা প্রকাশ বিএনপির
ভারতের মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেখানে সব ধর্মাবলম্বী নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হয়। আমরা আশা করি, ভারত সরকার ওয়াকফ সংশোধন আইনটি পুনর্বিবেচনা করবে।
আজ রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।


সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি ভারতের সংসদে মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ পাস হয়েছে। এই আইনের বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এটি ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করে এবং বৈষম্যমূলক আচরণকে উৎসাহিত করে। ভারতের মুসলমান এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই আইনকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেছে।
তিনি বলেন, ভারতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশেও পড়ে। তাই আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকারকে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ওয়াকফ হলো ইসলামে একটি দানের ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি স্থায়ীভাবে জমির মতো সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে দান করে থাকেন। এ সম্পত্তি বিক্রি বা কারও নামে হস্তান্তর করা যায় না। ভারতের ওয়াকফ বোর্ডগুলোর অধীনে থাকা প্রায় ১০ লাখ একর জমির অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণমূলক কাজে।
নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, এটি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এতে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। ভারতের অন্যান্য ধর্মীয় সংস্থায় ভিন্নধর্মীদের অন্তর্ভুক্তির কোনো নজির নেই। তাই এটিকে একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে শত শত বছর ধরে গড়ে ওঠা মসজিদ ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডসহ বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই আইনের বিরোধিতা করেছে এবং একে ইসলামী ওয়াকফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থি বলে অভিহিত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।