‘ফ্যাসিস্টের মুখ’ মোটিফে রহস্যজনক আগুন, তদন্তে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন লাগার ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে পুড়ে যায় আলোচিত ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি। ঘটনাটি তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫টা ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, শোভাযাত্রার জন্য অনেকগুলো মোটিফ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শুধুমাত্র দুটি মোটিফেই আগুন লাগে—এটি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।


এদিকে, পুলিশ জানায় যে, আশপাশের একাধিক সিসি ক্যামেরার ডিভিআর সংগ্রহের কাজ চলছে। ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করা হবে।
ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। আশপাশের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে।
চারুকলা অনুষদ থেকে সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শোভাযাত্রার মূল মোটিফ ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ কে বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চারুকলার একজন শিক্ষার্থী বলেন, এই ধরনের মোটিফ এক-দুই দিনে বানানো যায় না। এতে অনেক সময়, পরিশ্রম আর সৃজনশীলতা জড়িত। আগুনে পুড়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার।
উল্লেখ্য, এবারের বাংলা নববর্ষে শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে মূল মোটিফ তৈরি করা হয় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। ২০ ফুট উচ্চতার এই মোটিফে বাঁশ ও বেত দিয়ে এক নারীর ভয়ংকর মুখাবয়ব নির্মাণ করা হয়—মাথায় খাড়া শিং, হাঁ করা মুখ, বিশাল নাক ও তীব্র দৃষ্টির চোখ। এই চিত্র অনেকেই রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন, যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।