খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনায় প্রস্তুত বিএনপি, রাজধানীতে রোডম্যাপ চূড়ান্ত
দীর্ঘ প্রায় চার মাস চিকিৎসা শেষে আগামী মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁকে স্বাগত জানাতে রাজধানীতে দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে সুনির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, সোমবার (৫ মে) লন্ডন থেকে যাত্রা শুরু করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে ফিরবেন দুই পুত্রবধূও।


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে দলের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্যভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে। এ লক্ষ্যে দলের সব পর্যায়ে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে।”
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলের চেয়ারপারসনকে ঢাকায় অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কে কোথায় অবস্থান করবেন তার একটি রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়ান হোটেল পর্যন্ত, ছাত্রদল লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে খিলক্ষেত, যুবদল খিলক্ষেত থেকে হোটেল রেডিসন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপি হোটেল রেডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম, স্বেচ্ছাসেবক দল আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান,কৃষক দল বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড়, শ্রমিক দল কাকলী মোড় থেকে বনানী শেরাটন হোটেল, ওলামা দল, তাঁতীদল, জাসাস ও মৎসজীবী দল বনানী শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার, মুক্তিযোদ্ধা দলসহ সব পেশাজীবী সংগঠন বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান ২, মহিলা দল গুলশান ২ গোলচত্বর থেকে গুলশান এভিনিউ রোডে দাঁড়াবে।
একই সঙ্গে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মী যার যার সুবিধামতস্থানে অবস্থান দাঁড়াবেন।
তবে দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, কেউই বিমানবন্দর বা চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করতে পারবে না। নেতাকর্মীদের হাতে দলীয় ও জাতীয় পতাকা থাকবে। গাড়ির সঙ্গে বাইক শোভাযাত্রা বা পায়ে হাঁটা নিষেধ থাকবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, “সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
চার মাস আগে, গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান বেগম জিয়া। সেখানে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’-এ ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থরাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার হয়ে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে তিনি মুক্তি পান এবং তার সাজা বাতিল হয়।