আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে শঙ্কিত নয় সরকার
আওয়ামী লীগের যাবতীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহল থেকে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রোববার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের কোথাও একটি খুনি, গণতন্ত্রবিরোধী ও দুর্নীতিগ্রস্ত দলের পক্ষে কেউ কথা বলবে বলে আমরা মনে করি না। তাই আন্তর্জাতিকভাবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা নেই।’


তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিশ্ব শোক প্রকাশ করবে, এমন প্রত্যাশাও নেই আমাদের।’
এর আগে শনিবার (১০ মে) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায়’ আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। এর আওতায় দলটির সাইবার জগতের কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পরবর্তী কর্মদিবসে প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি, ওই বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত আইনে এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল, অঙ্গসংগঠন বা সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা পাবে ট্রাইব্যুনাল।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও মানবতাবিরোধী অপরাধ বা জাতীয় নিরাপত্তাবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার নজির রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি ও ইতালিতে নাৎসি ও ফ্যাসিস্ট দলগুলো নিষিদ্ধ হয়েছিল। এমনকি স্পেন ও বেলজিয়ামের মতো দেশেও কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিএইচআর) একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গসংগঠন ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দলটি গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, নেতাকর্মীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৯ মে) সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে সংশোধনীর পরিকল্পনার কথা জানায়।