নির্বাচন বাদে সরকার সব করছে, দেশ যাচ্ছে অনিশ্চয়তার দিকে: আমীর খসরু
দেশ অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে—এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য মানুষ গত ১৪-১৫ বছর ধরে ত্যাগ স্বীকার করে আসছে। অথচ এখন নির্বাচন বাদে বাকি সবকিছু করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।


আমীর খসরু বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুকেই উপেক্ষা করছে। এর ফলে দেশ একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজেট বা অর্থনৈতিক কোনো নীতিই কার্যকর হবে না।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেগুলোই সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে—এই সরকার কত দিন থাকবে, নির্বাচন কবে হবে, নির্বাচন–পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে—এই প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর নেই। জনগণের মধ্যে কোনো নিশ্চয়তা নেই।’
বাজেট নিয়ে প্রশ্ন
সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ভিত্তিতে বাজেট তৈরি করা হচ্ছে। এতে আমরা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেটেরই ধারাবাহিকতা দেখতে পাচ্ছি। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে দেশের অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট কতটা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।’
মিয়ানমারের সঙ্গে প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী সরকার একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।’
ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অন্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক বেশি। অতীতে এ নিয়ন্ত্রণের আড়ালেই লুটপাট হয়েছে। আপনি যত নিয়ন্ত্রণ বাড়াবেন, লুটপাট ততই বাড়বে। এখনই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
শেষে আমীর খসরু বলেন, ‘অন্যের সঙ্গে দ্বিমত থাকলেও তাদের পথকে সম্মান জানাতে হবে। রাজনৈতিক সহনশীলতা ছাড়া অর্থনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। সুতরাং আমাদের সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।