প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতির ঘোষণা সরকারি কর্মচারীদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২৫

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

বুধবার সচিবালয়ের কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।

তিনি বলেন, ‘এই কালো আইন প্রত্যাহারে আমরা ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে উপদেষ্টারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হবে। জরুরি সেবাগুলোতে প্রয়োজনে সময় কমিয়ে কর্মসূচি চালানোর কথাও জানান তিনি।

সরকারি কর্মচারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলবে।

অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে-

Nagad

>> কেউ যদি এমন কাজ করে যা অনানুগত্যের সামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে;

>> এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে। কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উস্কানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে;

>> কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।

এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।

এসব অসদাচরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, সাত দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ জানিয়ে জবাব না দিলে আবার সাত দিনের নোটিস দেওয়ার পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপিল রাখার সুযোগ রয়েছে। দণ্ডের নোটিস হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করা যাবে।

নতুন এই অধ্যাদেশকে আন্দোলনকারীরা বলছেন ‘নিবর্তনমূলক কালো আইন’।

এ পরিস্থিতিতে সোম ও মঙ্গলবারও দিনভর আন্দোলন চলে। অধ্যাদেশ সংশোধন নয়, পুরোপুরি বাতিলের দাবি তোলেন আন্দোলনকারীরা।

লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ বেশ কয়েকজন সচিবকে নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়।

পরে ভূমি সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, পরিসংখ্যান সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

মঙ্গলবার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সকল সচিব মিলে বুধবার সকাল ১০টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বিষয়টি অবহিত করবেন। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং সেটি জানানো হবে।

সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে আশ্বাস পেয়ে বুধবারের জন্য আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীরা।