মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমনে জি-৭ নেতাদের আহ্বান, গাজায় যুদ্ধবিরতির ডাক

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও সহিংসতা বন্ধে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ নেতারা। তারা এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতিসহ গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’

এদিকে, কানাডার ক্যানানাস্কিসে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলন থেকে সময়ের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশে ফিরে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি দ্রুত ফিরে যাচ্ছি স্পষ্ট কারণে।’ ট্রাম্পের এই তড়িঘড়ি প্রত্যাবর্তনের পেছনে রয়েছে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যকার চলমান সংঘর্ষ, যা টানা পঞ্চম দিনের মতো চলছে।

হোয়াইট হাউজ সূত্রে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে ফিরেই জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে অতিরিক্ত সামরিক সক্ষমতা মোতায়েন করা হচ্ছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ইরানবিরোধী অভিযানে সরাসরি যোগ দিচ্ছে না।

ট্রাম্পের দ্রুত ফিরে যাওয়া সত্ত্বেও হোয়াইট হাউজ জানায়, তিনি সম্মেলনে ‘চমৎকার একটি দিন’ কাটিয়েছেন এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন।

Nagad

তবে এ কারণে তিনি মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকগুলোতে, বিশেষ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পারবেন না।

এর আগেই ট্রাম্প Truth Social-এ ইরানকে সতর্ক করে লেখেন, ‘ইরান কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না।’ তিনি আরও দাবি করেন, ইরানকে দেওয়া একটি পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।

ট্রাম্প একই মাধ্যমে তেহরানের নাগরিকদের ‘অবিলম্বে রাজধানী ছেড়ে’ যাওয়ার আহ্বান জানান—যা পরে ইরানে বিস্ফোরণ ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয়তার মাধ্যমে সত্যে পরিণত হয়।

ইসরায়েলও একইসঙ্গে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায়, ফলে এক উপস্থাপক লাইভ সম্প্রচার ছেড়ে পালিয়ে যান।

এরইমধ্যে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ইরানে চালানো হামলায় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাসহ পরমাণু বিজ্ঞানীরাও নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে ইরান থেকে পাল্টা হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

জি-৭ নেতারা ট্রাম্পের আগাম ফিরে যাওয়া সমর্থন করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করতে পারে, তবে সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

সম্মেলনে কিছু বিভক্তির ইঙ্গিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত নেতারা একমত হন যে, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে’ এবং ‘ইরান হচ্ছে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাসের প্রধান উৎস। ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারবে না।’

এছাড়া ট্রাম্প রাশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘পুতিন আমার সঙ্গে কথা বলেন, অন্য কারো সঙ্গে না। ২০১৪ সালে রাশিয়াকে বহিষ্কার করাটা ভুল ছিল।’ খবর বিবিসির।