চালবাজারে করপোরেট সিন্ডিকেটের দাপট, কেজিতে দাম বাড়ল ৫–৭ টাকা
বোরো মৌসুমে ধান কাটার ভরা সময়েও হঠাৎ করেই রাজধানীসহ সারা দেশে চালের দাম বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। বাজার বিশ্লেষকদের দাবি, করপোরেট কোম্পানি ও বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে চালের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার খুচরা বাজারে মোটা চাল (ইরি/স্বর্ণা) বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি মানের পাইজাম/লতা ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা এবং সরু চাল (নাজিরশাইল/মিনিকেট) ৭০ থেকে ৮২ টাকা কেজি দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এসব চালের দাম ছিল ৫ থেকে ৭ টাকা কম।


উত্তরের মোকাম বগুড়ার শেরপুরে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। স্থানীয় রাইস মিল মালিকরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ায় ধান শুকাতে সমস্যা হচ্ছে, ফলে মিলগুলো চাল উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো মাঠ থেকে বিপুল পরিমাণ ধান কিনে মজুত করছে, যার ফলে বাজারে ধানের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
নওগাঁয়ও একই অবস্থা। এক সপ্তাহে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৮ টাকা। স্থানীয় চালকল মালিকদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দিয়ে ধান কিনতে হচ্ছে। তারা বলছেন, এসিআই, রূপচাঁদা, আকিজ, স্বপ্ন, প্রাণসহ বেশ কিছু কোম্পানি কৃষকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ধান কিনে নিজেদের গুদামে সংরক্ষণ করছে।
চালবাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে হাজার টন ধান মজুত করছে। এর ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। দ্রুত বাজার মনিটরিং ও অভিযান প্রয়োজন।’
পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের মজুত নীতিমালাকে উপেক্ষা করে করপোরেট গোষ্ঠী ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারের অর্ধেকের বেশি ধান কিনে ফেলেছে। মিলারদের হাতে পর্যাপ্ত ধান না থাকায় বাজারে চাপ তৈরি হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের নজরদারি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় মিলার ও মজুতদারদের সিন্ডিকেট চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে।