বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ: অবসরে গিয়ে সব ভাড়া পরিশোধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২

সংগৃহীত

টিকিট ছাড়া জীবনে অনেকবার ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা এমদাদুল হক (৬৫)। তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান গতবছর। এখন মানসিক প্রশান্তির জন্য রেলওয়ের সেই পাওনা ফেরত দিয়েছেন তিনি। জীবনে যতবার বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করেছেন, তার সব হিসেব করে পরিশোধ করে দিলেন এমদাদুল হক।

সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে আসনবিহীন দুই হাজার ৫৩০ টাকার টিকিট কাটার মাধ্যমে তা পরিশোধ করেন তিনি। এ সময় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন প্রধান বুকিং সহকারীর অফিসে বসিয়ে আপ্যায়নও করা হয়। সেখানে স্টেশন মাস্টার ও কর্মকর্তাদের সাথে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এমদাদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক এমদাদুল দুদকের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি কর্মজীবন থেকে অবসরে যান।

এমদাদুল হকের বড় ছেলে ইমরান গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বাবা সৎভাবে জীবনযাপন করেন। অন্য কেউ মনে কষ্ট পাবেন এমন কাজ তিনি কখনও করেননি। কারও কাছে এক টাকা ঋণ থাকলেও তাকে খুঁজে বের করে পরিশোধ করেন। তিনি আরও বলেন, শেষের দিকে বাবা দুদকের হেডকোয়ার্টারে কর্মরত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা ট্রেনে অনেকবার যাতায়াত করেছেন। সেসময় বিভিন্ন কারণে তিনি ট্রেনে টিকিট না কেটে আসা-যাওয়া করেছেন। কিন্তু যতবার তিনি ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন, তার হিসেব তিনি করে রেখেছিলেন। আর সেই হিসেব অনুযায়ী তিনি সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে টাকা পরিশোধ করেন।

এমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, যতো পূণ্যই করি না কেন এই দেনার দায় তো কোনো পূণ্য দিয়ে শোধ করার উপায় নেই। তাই সরাসরি রেলের খাতেই জমা দিয়ে দিলাম। জানি না তাতে আমার দায় মুক্তি হবে কি না। তবে মানষিক প্রশান্তি পাবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্টেশন কাউন্টারে এক ব্যক্তি আসেন বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের টাকা পরিশোধ করবেন বলে। তিনি জানান যে, আগে বিভিন্ন সময়ে টিকিট না কেটে ভ্রমণের হিসেব তার কাছে আছে। সে হিসাবে তিনি দুই হাজার ৫৩০ টাকা রেলওয়েকে দিতে চান। তখন স্টেশন বুকিং কাউন্টার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনে দুই হাজার ৫৩০ টাকা সমমূল্যের আসনবিহীন টিকিট ইস্যু করে দেওয়া হয়। পরে উনাকে স্টেশন প্রধান বুকিং সহকারীর অফিসে বসিয়ে আপ্যায়ন এবং ধন্যবাদ দেওয়া হয়।

সারাদিন/০৬ সেপ্টেম্বর/এমবি

Nagad